ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

প্রকাশকালঃ ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:০৩ অপরাহ্ণ ১৯০ বার পঠিত
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এসব বিক্ষোভ থেকে অনেক শিক্ষার্থীকে ধরপাকড়ের পর আরও জোরদার হয়েছে ফিলিস্তিনপন্থী এই আন্দোলন। যত দিন যাচ্ছে, বিক্ষোভ তত ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন নতুন ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়েছেন বিক্ষোভকারীরা।  গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কলম্বিয়া, ইয়েল, সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মতো বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।  বৃহস্পতিবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ৯৪ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলএপিডি ক্যাপ্টেন ক্যালিমনিস বলেছেন, এরমধ্যে ৯৩ জনকে আইন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য একজনকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। গত শতকের ষাটের দশক থেকে নানা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সরব হতে দেখা যায় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের শিক্ষার্থীদের।



এখানকার শিক্ষার্থীরাও গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। ক্যাম্পাসে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের কারণে ক্যালিফোর্নিয়া পলিটেকনিক হামবোল্ডট বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পর ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার সেন্ট পল ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানহাটন ক্যাম্পাসের মূল চত্বরে গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হচ্ছেন। সেখানে তারা সবুজ ভূমির ওপর তাঁবু স্থাপন করে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এ অবস্থায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মিনোচে শাফিক নিউইয়র্ক পুলিশকে ক্যাম্পাসে ডেকে আনেন। দাঙ্গা পুলিশ এক শ’রও বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করে। আটক শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে, শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের পর সোমবার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ওয়াক-আউট করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোমবার প্রথমে জানায়, ক্লাস অনলাইনে নেয়া হবে। পরে বলা হয়, শিক্ষাবর্ষের বাকি সময়টা হাইব্রিড মডেলে ক্লাস হবে। ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন কিছু মানুষ সমস্যা বাধানোর চেষ্টা করছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে। আমরা তাঁদের সেই সুযোগ দিতে পারি না।’  ইসরাইল-বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টরা এ বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা লজ্জাজনক; তাদেরকে আরও কঠোর আচরণ করতে হবে।



গত বছর ৭ অক্টোবর জঙ্গি সংগঠন হামাস ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তাদের হামলায় এক হাজার ২০০ জন মারা যান এবং আরও ২৪০ জনকে বন্দি করা হয়। জবাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তখন থেকে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান। অভিযানের ফলে খাবার, পানি ও ওষুধের অভাবে গাজায় মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো।