মোঃ আলমগীর হোসাইন, জামালপুর জেলা প্রতিনিধি:
জামালপুরের মাদারগঞ্জে সমবায় সমিতির আমানতকারীরা জমাকৃত টাকা ফেরতের দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সান্ধায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী রাজু’র নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে একটি মশাল মিছিল বের করে বালিজুড়ী বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে বালীজুড়ী বাজার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করে। দীর্ঘদিন ধরে আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের এই কর্মসূচি এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
১১ নভেম্বর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা উপজেলা পরিষদের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এর ফলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ অন্তত ২৯টি সরকারি দফতরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। চতুর্থ দিনেও অফিসে প্রবেশ করতে না পারায় কর্মকর্তাদের কাজকর্ম স্থগিত হয়ে পড়েছে। জন্মনিবন্ধন, ভূমি সংক্রান্ত কাজ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বিতরণসহ নানা সেবা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, আল-আকাবা,সোনালী, শতদল, নবদীপ, রংধনু ও স্বদেশসহ ২৭টি সমবায় প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত সংগ্রহ করে হঠাৎ গা ঢাকা দেয়। সরকারি হিসেবে এই অঙ্ক ৭৩০ কোটি টাকা হলেও বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ।
উত্তোলন কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী রাজু বলেন, “দুই বছর ধরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।”
অন্যদিকে সদস্য সোনা মোল্লা জানান, “অনেকে সন্তানদের স্কুল ফি দিতে পারছে না, চিকিৎসাও করাতে পারছে না। কয়েকজন গ্রাহক বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাদির শাহ্ সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন "আমাদের জাগায় থেকে আমারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
চলমান আন্দোলনে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা আর্থিক লেনদেন ও সরকারি সহায়তা কার্যক্রমে ব্যাঘাতের অভিযোগ করছেন। স্থানীয়রা দ্রুত সমস্যার সমাধান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন।