ভোলায় নিহত জেলে হাসানের পরিবারে শোকের মাতম

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০২:০৫ অপরাহ্ণ   |   ৯১ বার পঠিত
ভোলায় নিহত জেলে হাসানের পরিবারে শোকের মাতম

জহিরুল ইসলাম লিটন,বিশেষ প্রতিনিধি (ভোলা):-

 

জীবিকার তাগিদে নদীতে ইলিশ ধরতে গিয়ে জলদস্যুদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের গুপ্তমুন্সী গ্রামের জেলে মো. হাসান। শনিবার সন্ধ্যায় মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় প্রথমে জলদস্যুদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে, পরে তাদের ছোড়া গুলিতে নৌকাতেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন।

 



 

নিহত হাসান ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে পরিবারজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্ত্রী ও সন্তানের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্ত্রী মুক্তা। তিনি সরকারের কাছে স্বামীর হত্যার বিচার এবং পরিবারের জন্য সহযোগিতা চান।

 



 

হাসানের মা মমতাজ বেগম বলেন, "আমার ছেলে ছিল নিরীহ প্রকৃতির, সে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ছিল। নিজেই চলতে কষ্ট হতো, কোনো রকমে মাছ ধরে সংসার চালাতো। এখন তার দুই সন্তান এতিম হয়ে গেলো। আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।"
 

নিহতের স্ত্রী মুক্তা বলেন, "আমার স্বামী যা আয় করতো, তা দিয়ে সংসার চলতো। এখন আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? সন্তানদের পড়ালেখার খরচ কে চালাবে? আমার স্বামী কোনো দোষ করেনি, তবু তাকে হত্যা করা হলো। আমি বিচার চাই।"
 

হাসানের একমাত্র কন্যা সাদিয়া বলেন, "আমরা দুই ভাইবোন, এখন আমাদের দেখার মতো কেউ নেই। খাবার, পড়াশোনার খরচ কীভাবে চলবে, জানি না।"
 

স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "হাসান ছিলেন একজন প্রতিবন্ধী, তিনি কী এমন অপরাধ করেছিলেন যে তাকে জীবন দিতে হলো? নদীতে নিরাপত্তার জন্য নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, তাহলে সাধারণ জেলেরা কেন নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে? আমরা এই হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"
 

পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রিপন কুমার সরকার জানান, "নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি নদীতে জলদস্যু ও ডাকাত দমনে যৌথবাহিনী কাজ করছে।"
 

নিহত হাসানের পরিবার এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। শোকসন্তপ্ত পরিবারটি সরকারের সহযোগিতা ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।