বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতি সত্ত্বেও বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অ্যামাজনের ই-কমার্স ব্যবসা বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ডি জ্যাসির বিতরণ কৌশলের কারণে বিক্রি বাড়ছে। এই সময় তাদের বিক্রি ১১ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে অ্যামাজন।
অ্যামাজনের জুলাই প্রাইম ডে ছিল প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেচাবিক্রির দিন। গত ১১-১২ জুলাই—এই দুই দিন তারা মূলত বিশেষ গ্রাহকদের জন্য বিশেষ আয়োজন করে। এবার সেই প্রাইম ডেতে প্রায় ৩৭ লাখ ৫০ হাজার পণ্য বিক্রি করে অ্যামাজন। গত বছর অ্যামাজন ২০০ কোটি ডলার লোকসানের মুখে পড়লেও চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তারা মুনাফা করেছে ৬৭০ কোটি ডলার। বাজার বিশ্লেষকেরাও এতটা প্রত্যাশা করেননি। গত এক বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি মুনাফার রেকর্ড।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি জ্যাসি বলেছেন, এই পরিসংখ্যান বলে, গত ত্রৈমাসিকে কোম্পানির কতটা অগ্রগতি হয়েছে। তাদের আর্থিক সাফল্যের পেছনে আছে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের ব্যবসা বা এডব্লিউএস ও বিজ্ঞাপন। এডব্লিউএসের বিক্রি বছরে ১২ শতাংশ বেড়েছে, যদিও তারা বলছে, এই প্রবৃদ্ধি একধরনের স্থিতিশীল। এ ছাড়া বছরে বিজ্ঞাপনের আয় বেড়েছে ২২ শতাংশ।
অন্যান্য তথ্য বলছে, এ বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কালো মেঘ তৈরি হতে পারে। কোম্পানির নির্বাহীরা বলছেন, ক্রেতারা এখনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে অর্থের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। অনেক দেশেই গত কয়েক দশকের মধ্যে বেশ দ্রুতগতিতে পণ্যের দাম বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যামাজনের অনলাইন বিক্রি এপ্রিল থেকে জুন সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়েছে, যদিও বছরের শুরুতে বেচাবিক্রি ভালো ছিল না। ইনসাইডার ইন্টেলিজেন্সের প্রধান বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু লিপসম্যান বলেছেন, কোম্পানিটির ই–কমার্স ব্যবসায় এই উত্থান বছরের বাকি সময়ের জন্য উৎসাহজনক। এ ছাড়া গত বছর কোম্পানিটির বৈশ্বিক বিক্রির হার নিম্নমুখী থাকলেও এ বছর তা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে।
দুই বছর আগে প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন অ্যান্ডি জ্যাসি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল খরচ কমানো ও কর্মীদের দক্ষতার উন্নয়ন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনেক কর্মীকে ছাঁটাই করা হয় এবং বিতরণ প্রক্রিয়ায়ও বেশ পরিবর্তন আনা হয়।
জ্যাসি বলেছেন, অ্যামাজন এখন বড় বিনিয়োগ করছে; বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম প্রধান আগ্রহের জায়গা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এ ছাড়া অ্যামাজনের শেয়ারের দাম চলতি বছর ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে।