ভারতে বাংলাদেশি ইলিশের দামে আগুন

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৩ অপরাহ্ণ   |   ৩১ বার পঠিত
ভারতে বাংলাদেশি ইলিশের দামে আগুন

বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসার খবর কলকাতার মানুষকে উচ্ছ্বসিত করেছিল। তবে উচ্চমূল্যের কারণে সেই আনন্দ বেশিদিন টিকেনি। ক্রেতা না থাকায় ভারতীয় আমদানিকারকেরা ভাবছেন, এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আনা অব্যাহত রাখা আদৌ সম্ভব হবে কি না।
 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানায়, গত বৃহস্পতিবার কলকাতার বাজারে বাংলাদেশি ইলিশ নিয়ে খুব একটা সাড়া মেলেনি। শুক্রবার লেক মার্কেট, গারিয়াহাট ও মানিকতলার খুচরা বিক্রেতারা হাওড়ার পাইকারি বাজার থেকে সীমিত পরিমাণে (৫ থেকে ২৫ কেজি) ইলিশ নিয়েছেন মাত্র।
 

এরই মধ্যে খবর মিলেছে, গুজরাট থেকে বড় আকারের ইলিশের চালান বাজারে আসছে। এতে করে বাংলাদেশি ইলিশের চাহিদা আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মতে, গুজরাটের ইলিশ অনেক বেশি সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাবে।
 

বর্তমানে কলকাতায় এক কেজির বেশি ওজনের বাংলাদেশি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ রুপিতে (বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা)। অন্যদিকে একই আকারের গুজরাটের ইলিশের দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার ১০০ রুপি। এছাড়া মিয়ানমারের হিমায়িত ইলিশও মজুদ রয়েছে, যেগুলো বাজারে ছাড়া হলে ১ হাজার ৫০০ রুপিতে পাওয়া যাবে।
 

কলকাতার মাছ আমদানি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার মাসুদ বলেন,

“বাংলাদেশি ইলিশের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। এখনকার দামে খুব কম মানুষই এই মাছ কিনবে।”


তিনি জানান, সোমবার পর্যন্ত বাজার পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি চালু রাখা হবে কি না।
 

এর আগে গত মঙ্গলবার পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৫০ টন ইলিশ ঢুকলেও শুক্রবার পর্যন্ত আর মাত্র ২০ টন মাছ এসেছে।
 

কলকাতার ব্যবসায়ী অমর দাস বলেন,

“ডায়মন্ড হারবার থেকে যদি বড় সাইজের মাছ পাই, আমি ১০০ কেজি কিনতে রাজি। কিন্তু এবার বাংলাদেশি ইলিশের জন্য মাত্র ২০ কেজি নিয়েছি। ক্রেতা আগ্রহ না দেখালে মজুত করে লাভ নেই।”


মানিকতলার আরেক ব্যবসায়ী রাজু দাস জানান,

“বাংলাদেশি মাছের গঠন ভালো হলেও এগুলো ছোট এবং দাম অনেক বেশি। যদি বড় মাছের ক্ষেত্রে এই দাম হতো তাহলে ঠিক ছিল। ডায়মন্ড হারবারের মাছ পাওয়া গেলে বাংলাদেশি ইলিশের কোনো ক্রেতা থাকবে না।”


তবে সবকিছুর পরও অনেক ক্রেতার কাছে বাংলাদেশের ইলিশ আলাদা আবেগের নাম। যেমন আয়ুস্মান মুখার্জি, যিনি শুক্রবার ২ হাজার ৫০ রুপি দিয়ে একটি বাংলাদেশি ইলিশ কিনেছেন। তিনি বলেন,

“বাংলাদেশি ইলিশের স্বাদই আলাদা। তাই দাম যাই হোক, আমি এই মাছ চাই।”