অনেকেই মনে করেন ভাত খেলে ওজন বেড়ে যায়, বিশেষ করে ভুঁড়ি জমে। তাই কেউ কেউ ফিট থাকার জন্য ভাত খাওয়াই ছেড়ে দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ভাত না খেলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কারণ ভাতও গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।
ভারতের পুষ্টিবিদ সুরভি আগরওয়াল জানান—
ভাত ভিটামিন বি-এর অন্যতম উৎস, এতে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়াম, যা অন্ত্র ও ত্বকের জন্য উপকারী। কালো চাল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর, বাদামি চাল ফাইবারসমৃদ্ধ এবং লাল চালে রয়েছে প্রদাহবিরোধী উপাদান, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।
অন্যদিকে পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী বলেন—
ভাতে কার্বোহাইড্রেট, বিশেষত স্টার্চের পরিমাণ বেশি। এর ফলে ব্লাড সুগার ও ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে। তবে ভাত রান্নার ধরণ এবং কোন খাবারের সঙ্গে ভাত খাওয়া হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) বাড়বে না কমবে। তাই ভাত খাওয়ার পাশাপাশি রান্নার পদ্ধতিও জানা জরুরি।
চাল রান্নার আগে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে বাড়তি স্টার্চ বের হয়ে যায়।
মাড় না ঝরিয়ে ভাত রান্না না করে, বরং মাড় গালা ভাত রান্না করা ভালো। এতে স্টার্চ ও কার্বোহাইড্রেট কমে যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে দিনে সর্বোচ্চ ৩০ গ্রাম চাল (এক কাপ রান্না করা ভাত) যথেষ্ট। এতে প্রায় ১৫০-১৭০ ক্যালোরি পাওয়া যায়।
শুধু ভাত খেলেই চলবে না—
ভাতের সঙ্গে সবজি, মাছ বা সালাদ রাখতে হবে।
তেলে ভাজা বা অতিরিক্ত ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
দিনের বেলায় ভাত খাওয়াই উত্তম। কারণ দিনে হাঁটাচলা ও কাজকর্ম বেশি হয়, ফলে শরীরে জমে থাকা কার্বোহাইড্রেট সহজে খরচ হয়ে যায়। রাতে ভাত খেলে হজম ধীর হয় এবং ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
দুপুরে ভাত খাওয়ার পর ঘুম না দিয়ে হালকা হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করুন।
এতে রক্তসঞ্চালন বাড়বে ও হজম সহজ হবে।
চাইলে এক কাপ গ্রিন টি খেয়ে শরীর সতেজ রাখা যায়।
👉 সঠিক নিয়মে রান্না করা ও পরিমিত ভাত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, পাশাপাশি শরীরও থাকবে সুস্থ ও প্রাণবন্ত।