জামায়াত ইশতাহারে ১৮ দফা: “নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু করার নিশ্চয়তা চাই”

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৩:২৯ অপরাহ্ণ   |   ৩৫ বার পঠিত
জামায়াত ইশতাহারে ১৮ দফা: “নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু করার নিশ্চয়তা চাই”

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ১৮ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে আলোচনা শেষে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এই তথ্য জানান।
 

জামায়াতের প্রস্তাবিত ১৮ দফা সংক্ষেপে নিম্নরূপ—

১. জুলাই সনদে আইনি ভিত্তি প্রদান নিশ্চিত করেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পর আগামী নভেম্বরে গণভোট আয়োজন করতে হবে।
২. উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (অনুচ্ছেদ ২০) অনুযায়ী প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীকই ব্যবহার করবে; অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে।
৩. নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রত্যেক স্তরে কর্মকর্তা- কর্মচারীদের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. প্রিজাইডিং, পোলিং, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক সামরিক সদস্য মোতায়েন করতে হবে।
৬. সকল নির্বাচনি বুথে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে।
৭. পূর্বে বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না; মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক (ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি) নিয়োগ শতভাগ লটারির ভিত্তিতে করতে হবে।
৮. রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগে প্রশাসন ছাড়াও ইসির নিজস্ব দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে নির্বাচন করতে হবে।
৯. সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে সামরিক, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
১০. প্রতিযোগী সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে নির্বাচনী মাঠ সমান করা হবে।
১১. সারাদেশে থাকা সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে; অতীতে দলীয় প্রয়োজনে দেওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে সরকারে জমা দিতে হবে।
১২. নির্বাচনী এলাকায় অবৈধ অস্ত্রে সন্ত্রাস বা আতঙ্ক সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
১৩. ভোটারদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে নির্বাচনী এলাকার ভেতরে ও বাইরে সন্ত্রাসী তৎপরতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে দমন করতে হবে।
১৪. ভোটার তালিকায় কোনো ভোটারের ছবি অস্পষ্ট থাকলে তা সংশোধন করে ছবি সহ তালিকা পোলিং এজেন্টদের সময়মতো সরবরাহ করতে হবে।
১৫. পোলিং, প্রিজাইডিং অফিসার, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তাদেরও পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
১৬. প্রবাসী ভোটারদের ভোট প্রদানের প্রক্রিয়া সহজ করতে ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্টের একটি দিয়ে ভোট দেওয়ার অনুমোদন দিতে হবে; রেজিস্টার্ড প্রবাসী ভোটারদের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সময়মতো দিতে হবে।
১৭. নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও নিরপেক্ষতা যাচাই করতে হবে।
১৮. অতীতে বদল করা বা ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত ভোটকেন্দ্রগুলোর বিষয়ে অভিযোগ বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে।

 

জামায়াত আশা প্রকাশ করে যে উপরের নীতিগুলো বাস্তবায়ন করলে নির্বাচন সংবিধানিক, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণের লিখিত কিংবা মৌখিক অসন্তোষ প্রশমিত হবে।