বোর্ড পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতির কার্যকর অভ্যাস

প্রকাশকালঃ ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৫০ অপরাহ্ণ ১৯২ বার পঠিত
বোর্ড পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতির কার্যকর অভ্যাস

বোর্ড পরীক্ষা শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পরীক্ষার্থীদের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

প্রস্তুতির ধরন নির্ভর করছে আপনার হাতে কি পরিমান সময় আছে তার উপর। তবে আপনাকে একভাবে আগাতে হবে আর যদি স্বল্প সময়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে চান তবে ভিন্ন পদ্ধতিতে আগাতে হবে। বোর্ড পরীক্ষার আগে প্রস্তুতির কার্যকর কিছু অভ্যাস করে নিতে হবে—

পড়ার পরিকল্পনা ও সময়সূচিঃ

যারা প্রায় দুই বছর ধরেই ভালো প্রস্তুতি নিয়েছো কিংবা যারা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারোনি; সবাইকেই এ মুহূর্তে এসে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পড়তে বসার আগেই পড়ার বিষয়বস্তু ও সময় নিয়ে ভালো পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। ভালো পরিকল্পনা তৈরি করতে পড়ার বিষয়গুলো কয়েকটি সেশনে ভাগ করে নিতে হবে। প্রতিটি সেশনের জন্য সময় নির্দিষ্ট করা এবং পড়ার মাঝে বিরতির জন্য সময় রাখতে হবে। আর অবশ্যই, বোর্ড পরীক্ষার রুটিনটি পড়ার টেবিলের সামনে টাঙ্গিইয়ে রাখতে হবে, এতে পড়াশোনার প্রতি একটা দায়বদ্ধতার জায়গা তৈরি হবে।

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তৈরি করাঃ

প্রতিটি সেশন শেষ করার মাধ্যমে কোন কোন লক্ষ্য অর্জন করতে হবে, সেগুলো আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। যেমন ৩০ মিনিটের একটি সেশনের মাধ্যমে কোন বিষয়ের একটি অধ্যায়ের বিগত বছরগুলোর প্রশ্নগুলো রিভিশন দিতে চাইলে, এভাবে প্রতিটি সেশনের লক্ষ্য তৈরি করে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রতিটি পড়াশোনার সেশনের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নযোগ্য এবং পরিমাপযোগ্য হওয়া উচিত।

পড়ার টেকনিকঃ

নিজের জন্য উপযুক্ত পড়ার টেকনিক বের করুন। কেবল মুখস্থ না করে বুঝে পড়ার চেষ্টা করুন। কিছু পড়া নোট করুন, তারপর অনুশীলন করুন, একই ধরনের সমস্যাগুলোর সমাধানের প্র্যাকটিস প্র্যাকটিস করা অথবা নোটগুলোতে চোখ বোলানো, সেটা ঠিক করতে হবে। তবে বোর্ড পরীক্ষা সামনে রেখে পড়া, নোটগুলোতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া ও এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মার্ক করে প্রয়োজনে নতুন কিছু নোট টুকে রাখতে হবে।

বিগত বছরের প্রশ্ন দেখাঃ

প্রতিবছরই বোর্ড পরীক্ষায় কিছু না কিছু প্রশ্ন বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে আসে। তবে আসবেই, এমনটা বলা যাবে না। আসার সম্ভাবনা খুব বেশি। আর বেশির ভাগ প্রশ্নের ক্ষেত্রে যেটা দেখা যায়, হুবহু বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে না এলেও একই রকমের প্রশ্ন আসে। প্রশ্নের ধরন মোটামুটি একই থাকে। তাই বোর্ড পরীক্ষার প্রস্তুতির একটা বড় অংশজুড়ে থাকা উচিত বিগত বছরগুলোর প্রশ্নের সমাধান করার চেষ্টা করা। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করার মাধ্যমে পরীক্ষার ধরন সম্পর্কে ধারণা নেওয়া। প্রশ্নের ধরন ও উত্তর লেখার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া।

নিয়মিত রিভিশন দেওয়াঃ

প্রতিটি বিষয় নিয়মিত রিভিশন দেওয়া জরুরি। প্রায় সব বিষয়ই দু-এক দিন পরপর রিভিশন দেওয়ার চেষ্টা করা। যদি বিষয়ের সংখ্যা ১০ থেকে ১২টির মধ্যে হয়, তাহলে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬টি বিষয় রিভিশন দেওয়া যেতে পারে। নিয়মিত রিভিশন দেওয়ার মাধ্যমে পড়া বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে। রিভিশনের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে নিতে হবে।

টপিক মনে রাখার কৌশলঃ

যেসব টপিক একবার পড়া হয়েছে, সেগুলো যাতে দ্বিতীয়বার আবার বিস্তারিত ঘাঁটতে না হয়। সে জন্য ওই টপিকের জন্য যেভাবে ভালো হয়, সেভাবে নিজের মতো করে চার্ট, গ্রাফ, চিত্র, সূত্র, ছন্দ ইত্যাদি তৈরি করে সেগুলো পড়ার টেবিলের সামনে টাঙিয়ে রাখা যেতে পারে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা, উপপাদ্য, সূত্র, লেখকের তথ্য, ব্যাকরণের টার্ম, পরিসংখ্যানের তথ্য ইত্যাদি এভাবে লিখে রাখলে বইয়ের বিষয়গুলো হালকা মনে হবে। পড়া মনে থাকবে এবং একই সঙ্গে খুব দ্রুত একই ধরনের তথ্যের মধ্যে সম্পর্কও বুঝে ফেলা সম্ভব হবে।

মনোযোগ নষ্টকারী বিষয় এড়িয়ে চলাঃ

মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি ইত্যাদি মনোযোগ নষ্টকারী বিষয় এড়িয়ে চলুন। পড়ার সময় মনোযোগী হওয়ার জন্য শান্ত পরিবেশে পড়ুন।বোর্ড পরীক্ষা শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পরীক্ষার্থীদের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়াঃ

পরীক্ষা সামনে রেখে শুধু পড়াশোনার ভেতরে থাকলে হবে না। পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টিকর পরিমিত খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, হালকা শরীরচর্চা, ধর্মকর্ম—এগুলোর মধ্যে একটা সুন্দর সমন্বয় করে নিতে হবে। সুস্থ থাকলে মনোযোগ ও জ্ঞান ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।