২০২২-২৩ অর্থবছরে, বাংলাদেশের জিডিপির তুলনায় বিনিয়োগ প্রায় স্থির ছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্প্রতি জিডিপি প্রবৃদ্ধির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে। এতে এই তথ্য উঠে এসেছে। এর আগের দুই বছরের পরিসংখ্যানের সঙ্গে তুলনা করলে, এই হ্রাসমান পরিস্থিতি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিবিএসের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপির অনুপাতে বিনিয়োগের হার ছিল ৩২ দশমিক ০৫ শতাংশ; এর আগের অর্থবছর ২০২০-২১ এ ছিল ৩১ দশমিক ০২ শতাংশ। সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী লক্ষ্য অর্জন করতে হলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির অনুপাতে বিনিয়োগের হার হতে হবে ৩৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা জানান, বাজেটে বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হলেও দীর্ঘদিন ধরেই এটি জিডিপির ৩০ থেকে ৩১ শতাংশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সরকারের বিনিয়োগ বেশ বাড়লেও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা, অন্যদিকে দেশের ভেতরে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব যেভাবে প্রকট হচ্ছে, তাতে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি কবে বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল হবে, তা বলা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের সাহস পাচ্ছেন না। দেশের অভ্যন্তরে এখন ডলারের দরে অস্থিরতা চলছে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আগের অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরও সরকার কৃচ্ছ্রসাধন নীতি অনুসরণ করছে। এর প্রতিফলন সরকারি বিনিয়োগেও দেখা যাচ্ছে। চলতি বছরের বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ এর আগের অর্থবছরের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। সরকার মূলত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে থাকে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এখাতে বরাদ্দের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৬৫ হজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ফলে এডিপি বাস্তবায়ন পরিস্থিতি চলতি অর্থবছরের তুলনায় ভালো না হলে আগামী অর্থবছরেও সরকারি বিনিয়োগ বাড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।