১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির, নিরাপত্তা জোরদার

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:৪৪ অপরাহ্ণ   |   ৬২ বার পঠিত
১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির, নিরাপত্তা জোরদার

আওয়ামী লীগের সরকারের সময় টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১০ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাদের বাংলাদেশ জেলের প্রিজন ভ্যানে আদালতে আনা হয়।
 

সেনা কর্মকর্তাদের হাজির করার জন্য সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা সেখানে দায়িত্বে ছিলেন।
 

মামলায় গ্রেপ্তার আছেন ১০ সেনা কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহাবুব আলম, কে এম আজাদ; কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে); লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন এবং মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
 

এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজন পলাতক। এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকও পলাতক। আজ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
 

একই সঙ্গে সরকার ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ’ প্রণয়ন করেছে, যা গত সোমবার লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গুমের আদেশ বা অনুমতি প্রদানকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডারও শাস্তিযোগ্য হবেন। সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই এই আইনের আওতায় বিচারিত হতে পারেন।
 

অধ্যাদেশে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এ অপরাধে জামিন এবং আপস করা যাবে না। এছাড়া, গ্রেপ্তার ব্যক্তির অবস্থান ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হওয়া পর্যন্ত ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ গোপন রাখা যাবে।
 

উপদেষ্টা পরিষদ গত ৬ নভেম্বর অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং অভিযোগ গঠনের ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
 

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যদি কাউকে গ্রেপ্তার, আটক বা অপহরণ করে তা অস্বীকার করেন বা অবস্থান/পরিণতি গোপন রাখেন, এবং এতে ব্যক্তি আইনি সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে এটি গুম হিসেবে গণ্য হবে। দায়ী ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।