রেললাইনে ফের নাশকতা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ৩০০ ট্রেনযাত্রী,

প্রকাশকালঃ ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৪:৫০ অপরাহ্ণ ২৩৮ বার পঠিত
রেললাইনে ফের নাশকতা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ৩০০ ট্রেনযাত্রী,

পূর্বধলার স্টেশন মাস্টার আব্দুল মোমেন ও জারিয়ার স্টেশন মাস্টার মনির হোসেন বলেন, ডগস্পাইকের সাহায্যে কাঠের স্লিপারগুলো রেলের লোহার পাতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৪টি স্ল্পিারের ২৮টি ডগস্পাইক একই সময়ে খুলে থাকার ঘটনাটি স্বাভাবিক নয়। খুবই রহস্যজনক। দুস্কৃতকারীরা খুলে নিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। 
নেত্রকোণায় অল্পের জন্য ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন একটি ট্রেনের তিন শতাধিক যাত্রী।

রেল লাইনের ১৪টি স্লিপারের ২৮টি ডগস্পাইক (হুক) রহস্যজনকভাবে খুলে থাকায় মঙ্গলবার সকালে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বালুঘাটা এলাকায় দেখা দিয়েছিল এমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

কর্তব্যরত আনসার সদস্য, রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক সতর্ককতামূলক ব্যবস্থার কারণে ট্রেনটিসহ যাত্রীরা রক্ষা পান।

পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসন ও রেলের স্থানীয় কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে এটিকে নাশকতার চেষ্টা বলেই আশঙ্কা করছেন। তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন জেলা পুলিশ সুপার।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা পূর্বধলা-জারিয়া রেল স্টেশনের মাঝামাঝি বালুঘাটা এলাকার ১৭ নম্বর রেলসেতুর ওপর রেললাইনের বেশকিছু ডগস্পাইক (হুক) খুলে থাকার দৃশ্য দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তারা ঘটনাটি জারিয়া ও পূর্বধলা রেলস্টেশনের মাস্টার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।

ওই সময় শ্যামগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ২৭২ নম্বর লোকাল ট্রেনটি পূর্বধলা স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল। আর এর কয়েক মিনিট পরই যাওয়ার কথা ছিল জারিয়া স্টেশনে।

আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ঘটনাটি জানার পর পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খবিরুল ইসলাম ও স্টেশন মাস্টার আব্দুল মোমেন তাৎক্ষণিক বিষয়টি ট্রেন চালককে জানান। এরপর ৮টার দিকে চালক ঘটনাস্থলের অন্তত ২০০ গজ আগে ট্রেনটি থামিয়ে দিয়ে ট্রেনটি রক্ষা করেন। এর সঙ্গে পাঁচটি বগিতে থাকা তিন শতাধিক যাত্রীও ভয়াবাহ দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পান। পরে রেলের মিস্ত্রিরা এসে আবার ১৫টি ডগস্পাইক স্থাপন করলে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে টেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ দুই রেল কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। টের না পেলে ট্রেনটি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়তো। এমনকি ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারতো।

পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে আমার কাছেও নাশকতার চেষ্টা বলেই মনে হয়েছে। তবে তদন্ত করলে বিষয়টি সুস্পষ্ট হবে।’

অন্যদিকে জেলার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্যে ঘটনাটি আমাদের কাছে নাশকতা মনে হচ্ছে না। কারণ ডগস্পাইকগুলো খুলে নেয়ার মতো কোনো দাগ বা আলামত দেখা যায়নি। এমনও হতে পারে এগুলো আগে থেকেই খুলে আছে।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ আইনি সহযোগিতা চাইলে আমরা করবো।