গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ০৪:০৮ অপরাহ্ণ   |   ২৯ বার পঠিত
গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

রবিবার ট্রাইব্যুনালে গ্রেফতারকৃত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে হাজির করার পর প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ তারিখ ঠিক করেন।
 

একই সাথে এই দুই মামলায় পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া অন্য পলাতক আসামিদের জন্যও রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।
 

আজ প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় অন্য প্রসিকিউটর এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন।
 

আজ সকালে ঢাকার সেনানিবাসে স্থাপিত সাময়িক কারাগার থেকে জেলের বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে দুই মামলার ১৩ আসামি সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তাদের উপস্থিতি ঘিরে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সেনা, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়।
 

গত ৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুটি মামলায় তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, ডিজিএফআই-এর সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
 

পরে পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের ২২ অক্টোবর হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হলে সেদিন সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
 

বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্য হলেন—

  • বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার (অধিনায়ক),

  • বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং

  • বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী
     

যে ১৩ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে:

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম (র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক)

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কে এম আজাদ

  • কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন

  • কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এলপিআর)

  • সাবেক পরিচালক, র‌্যাব গোয়েন্দা শাখা — লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান

  • লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন

  • লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম

  • সাবেক পরিচালক, ডিজিএফআই — মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী
     

অন্যদিকে, রাজধানীর রামপুরায় জুলাই-আগস্টে ২৮ জনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত বিন আলম মুনকে আগামীকাল ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
 

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর ১১ অক্টোবর সেনাবাহিনী জানায় যে ৩০ আসামির মধ্যে ২৫ জন বর্তমান বা সাবেক সেনা কর্মকর্তা, যাদের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, একজন এলপিআরে এবং ১৫ জন কর্মরত ছিলেন।
 

এরপর ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের ‘এমইএস বিল্ডিং নং-৫৪’ কে সাময়িক কারাগার হিসেবে ঘোষিত করা হয়।
 

প্রজ্ঞাপনটি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাক্ষর করেন নিরাপত্তা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ আল


পরবর্তী পদক্ষেপ:
৩ ও ৭ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।