নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের সর্বাত্মক প্রস্তুতি: প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৪০ অপরাহ্ণ   |   ৩৮ বার পঠিত
নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের সর্বাত্মক প্রস্তুতি: প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
 

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণরূপে নির্বাচন-কেন্দ্রিক। নিরাপত্তা ও সমন্বয়ের ব্যাপক পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।”
 

সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান, ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
 

নির্বাচন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি—মোট ৭ লাখ ৬৮ হাজার সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
 

এর মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ সদস্যকে আইন ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে পুলিশ সদরদপ্তরের মানবসম্পদ বিভাগ প্রণীত নয়টি প্রশিক্ষণ মডিউল অনুযায়ী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
 

অন্যদিকে, ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে নিয়োগের লক্ষ্যে ৫ লাখ ৮৫ হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার সশস্ত্র এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার নিরস্ত্র সদস্য থাকবেন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে গড়ে ১৩ জন নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করবেন।
 

এ ছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৩ হাজার সদস্য (প্রায় ১ হাজার ১০০ প্লাটুন) নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, যা ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে।
 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হবে। নির্বাচনের সময় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যকে “স্ট্রাইকিং ফোর্স” হিসেবে মাঠে রাখা হবে, যাতে যে কোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
 

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশ সদরদপ্তর ও প্রতিটি জেলায় নির্বাচন কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে।
 

ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরাবডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
 

সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “গণমাধ্যমের ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না। তারা অবাধে নির্বাচন কাভার করতে পারবেন। পর্যবেক্ষকদের জন্যও পর্যাপ্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।”
 

নির্বাচন চলাকালে সারাদেশে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স সদা প্রস্তুত থাকবে, যাতে কোনো নিরাপত্তা সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যায়।
 

তিনি আরও জানান, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য নতুনভাবে ১০ হাজার ২৬৪ পুলিশ সদস্য, ২ হাজার ১৪৫ আনসার ও ভিডিপি সদস্য, ৫ হাজার ৫১৩ বিজিবি সদস্য এবং ৬৩৪ কোস্ট গার্ড সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: বাসস