|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০২ অক্টোবর ২০২৫ ০৩:১৬ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৩:৩৫ অপরাহ্ণ

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম


অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম


বশিষ্ট আইনজীবী ও লেখক
"আমান উল্লাহ সরকার"-এমবিএ,এমবিএস,এলএলবি,এমএটি(ডিইউ)......



 


                       বশিষ্ট আইনজীবী ও লেখক "আমান উল্লাহ সরকার"


 

আয়কর আইনে বিশেষ আদেশ জারির মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে। নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে গত ৪ আগস্ট থেকে, আর চলতি অর্থবছরের রিটার্ন জমার শেষ সময় আগামী ৩০ নভেম্বর

কারা অনলাইন রিটার্ন দিতে বাধ্য নন

কিছু নির্দিষ্ট করদাতার ক্ষেত্রে অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক নয়। এরা হলেন—
১. ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতা
২. শারীরিকভাবে অক্ষম (সনদপ্রাপ্ত) করদাতা
৩. বিদেশে কর্মরত ব্যক্তি
৪. মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি


কোথায় ও কীভাবে রিটার্ন জমা দেবেন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এখন থেকে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। অনেকের কাছে এটি নতুন বিষয়, তাই ধাপে ধাপে প্রক্রিয়াটি নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রথমে নিবন্ধন

  • এনবিআরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে e-return অপশন নির্বাচন করুন।

  • আগে নিবন্ধন না থাকলে “I am not yet registered” বেছে নিন।

  • টিআইএন ও নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর দিয়ে আবেদন করুন।

  • মোবাইলে পাওয়া ওটিপি (OTP) নিশ্চিত করে পাসওয়ার্ড সেট করলে নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।

এরপর সাতটি ধাপ অনুসরণ করে সহজেই রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।


ধাপে ধাপে অনলাইন রিটার্ন জমা

ধাপ ১: অ্যাসেসমেন্ট ইনফরমেশন
এখানে আপনার ফরম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ থাকবে। আপনাকে শুধু আবাসী বা অনাবাসী নিশ্চিত করতে হবে, করমুক্ত আয় আছে কি না জানাতে হবে এবং আয়ের উৎস নির্বাচন করতে হবে। এরপর ‘সেভ অ্যান্ড কনটিনিউ’।

ধাপ ২: আয়ের হিসাব
আপনার আয়ের উৎসভেদে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। যেমন—

  • চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান, পদবি, বেতন, ভাতা ও সুবিধার বিবরণ

  • সঞ্চয়পত্র থাকলে তার নম্বর, ক্রয়মূল্য, মুনাফা, কেটে নেওয়া কর ইত্যাদি

ধাপ ৩: বিনিয়োগ ও কর রেয়াত
বিভিন্ন বিনিয়োগের তথ্য প্রদান করতে হবে, যেমন—
জীবনবিমা, ডিপোজিট পেনশন স্কিম, সঞ্চয়পত্র, মিউচুয়াল ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড, শেয়ার, অবসর ভাতা তহবিল, জাকাত তহবিল ও সর্বজনীন পেনশন স্কিম।

ধাপ ৪: খরচের বিবরণ
বছরজুড়ে আপনার ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে—বাড়িভাড়া, বাজার খরচ, যাতায়াত, শিক্ষা, পরিষেবা বিল, উৎসব ভাতা ইত্যাদি।

ধাপ ৫: সম্পদ ও দায় বিবরণী
এটি রিটার্নের সবচেয়ে সংবেদনশীল ধাপ। এখানে জানাতে হবে—

  • ব্যাংক জমা, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড

  • নগদ অর্থ, সোনা, মূল্যবান সামগ্রী, জমি, ফ্ল্যাট

  • আসবাব, ইলেকট্রনিকস, ব্যবসায়িক মূলধন, বিদেশে অবস্থিত সম্পদ
    দায় বিবরণীতে দিতে হবে ঋণ, ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য বকেয়া।
    ❗ ভুল বা গরমিল থাকলে রিটার্ন নিরীক্ষায় পড়তে পারে।

ধাপ ৬: কর দায়
এখানে আপনার মোট কর নির্ধারণ হবে।

  • অগ্রিম কর বেশি পরিশোধ করা থাকলে আর কোনো কর দিতে হবে না।

  • কম পরিশোধ করা থাকলে অবশিষ্ট কর জমা দিতে হবে।
    শেষে ‘ফাইনাল পেমেন্ট’ কলামে “পেয়েবল টাকা…” প্রদর্শিত না হলে বুঝবেন আপনার কর পরিশোধ সম্পূর্ণ।


✅ সব ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন করলে আপনি সফলভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫