যতই কঠিন হোক, সুস্থ প্রজন্ম গড়তে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২০ আগu ২০২৫ ০১:০৯ অপরাহ্ণ   |   ৩৪ বার পঠিত
যতই কঠিন হোক, সুস্থ প্রজন্ম গড়তে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “যতই চ্যালেঞ্জিং হোক, আমাদের সুস্থ ও সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে।”
 

বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সেখানে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ স্বাক্ষরিত হয়।
 

ড. ইউনূস বলেন, স্বাস্থ্যখাতের এই বিষয়টি জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। “একটি দেশের টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য দরকার দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ। সুস্থ কর্মক্ষম মানুষ ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
 

তিনি উল্লেখ করেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই অসংক্রামক রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ অবস্থা ও আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় এ সংকট আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে। এটি শুধু স্বাস্থ্যখাত নয়, বরং অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের প্রতিবেদন তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশই ঘটে অসংক্রামক রোগের কারণে। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় ৭০ বছরের আগে, যা অকাল মৃত্যু হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যয়ের ৬৯ শতাংশ মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে বহন করতে হয়, যার বড় অংশ অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়।
 

তিনি আরও বলেন, ক্যান্সার বা জটিল অসংক্রামক রোগ হলে একটি পরিবার প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়। ফলে জাতীয় অর্থনীতিরও ক্ষতি হয়।
 

ড. ইউনূস বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন যেমন জরুরি, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকারসহ সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
 

তিনি তিনটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন—

প্রথমত: জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। অনেকেই জানলেও জীবনযাপনে তা প্রতিফলিত হয় না। তরুণদের মধ্যে কেউ অপুষ্টিতে ভুগছে, আবার কেউ অতিরিক্ত ওজনে আক্রান্ত। তামাকের ব্যবহার ও অতিরিক্ত চিনি গ্রহণও বড় ঝুঁকি। স্বাস্থ্যবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও শিশু, কিশোর ও নারীর স্বাস্থ্যকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
 

দ্বিতীয়ত: সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা দরকার। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে উদ্যোগ নিলে যৌথ ঘোষণার বাস্তবায়ন সহজ হবে।
 

তৃতীয়ত: যেকোনো কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন জরুরি। এজন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবল ও পর্যাপ্ত অর্থায়ন। তিনি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যৌথ ঘোষণার বাস্তবায়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।