একটা লম্বা সময় পর্যন্ত বিশ্বকাপে অংশ নেওয়াটাকেই নিজেদের ক্রিকেটের বড় অর্জন হিসেবে দেখত আফগানিস্তান। তবে সেই সময় পাল্টেছে বহু আগেই। নবমবারের মতো মাঠে গড়াতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সপ্তমবারের মতো খেলতে যাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। যেখানে তাদের স্বপ্নটা এবার গ্রুপপর্ব পেরিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড হয়ে অন্তত সেমিতে খেলা।
এটা কেবল নিছক স্বপ্ন নয় দলটির; আফগানরা যে এমনটি করে দেখাতে পারবে তা বিশ্বাস করেন অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটারই। আফগানদের অধিনায়ক হিসেবে সেই বিশ্বাসটা আছে রশিদ খানের মধ্যেও। তাই তো আগামীকাল ভোর সাড়ে ৬টায় গ্রুপপর্বে উগান্ডার বিপক্ষে বিশ্বকাপ মিশনে নামার আগে হুঙ্কার দিয়ে জানালেন, তারা এখন কেবল আর বোলিং নির্ভর দল নয়। ব্যাটিংয়েও যথেষ্ট শক্তিশালী। এমনকি ২০০ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের সামর্থ্যও আছে তাদের।
নিজেদের ব্যাটিং সামর্থের কথা জানিয়ে রশিদ বলেন, ‘আগে আমাদের ব্যাটিং নিয়ে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। আগে আমাদের জয়ে বড় ভূমিকা রাখত বোলাররা। এরপর আমাদের দলে তরুণ ব্যাটাররা আসে, বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে। তারা যেভাবে নিজেদের প্রমাণ করে জাতীয় দলে এসেছে। যেভাবে কঠোর পরিশ্রম করছে, আফগানিস্তানের হয়ে খেলার সুযোগ লুফে নিচ্ছে এই তরুণ বয়সে এবং গোটা বিশ্বে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মাধ্যমে নিজেদের মেলে ধরছে তা এক কথায় অসাধারণ। তারা দিন দিন উন্নতি করছে। ’
নিজেদের ব্যাটিংয়ে ২০০ রান তাড়া করার হুঙ্কার দিয়ে রশিদ বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের যে ধরনের ব্যাটিং লাইন-আপ আছে তাতে আমারা ভালোভাবেই ২০০ রান তাড়া করতে পারব। আমাদের ক্রিকেটারদের সেই সামর্থ্য, দক্ষতা ও মেধা রয়েছে যা এখন মাঠে কাজে লাগিয়ে রান তাড়া করতে হবে। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিনশেষে শক্ত মানসিকতার খেলা। আমরা যদি সঠিক মাইন্ডসেট নিয়ে নামতে পারি এবং বিশ্বাস রাখি যে আমরা পারব। তাহলে সবকিছুই সম্ভব। ’
চলতি বিশ্বকাপে গ্রুপ সি তে আছে আফগানিস্তান। যেখানে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে তাদের মুখোমুখি হতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউ গিনি ও উগান্ডার বিপক্ষে। এরপর সুপার ৮ খেলে সেমিফাইনাল। সে পথটা অনেক দূরের হলেও অনেকেই আফগানদের সেমিতে দেখছেন। যাকে নিজেদের ক্রিকেটের জন্য বড় পাওয়া হিসেবেই দেখছেন রশিদ। সঙ্গে এটাও জানিয়ে রেখেছেন সেই লক্ষ্যেই তারা আসর শুরু করবে।
সেমিতে খেলা নিয়ে আফগান অলরাউন্ডার বলেন, ‘কেউ কেউ আমাদের সেমিফাইনালে দেখছেন। আর এটা আমরা বেশ ইতিবাচক হিসেবেই গ্রহণ করেছি। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন আমাদের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করায় কঠিন ছিল। আর এখন আমাদের সেরা চার দলের একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদের জন্য বিরাট কিছু। তবে এটা নিয়ে আমরা পড়ে থাকছি না। কারণ দিনশেষে আপনাকে মাঠে খেলতে হবে, নিজের সেরাটা দিতে হবে। সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও আমরা সেমি থেকে মাত্র ১ ম্যাচ দূরে ছিলাম। কাজেই আমি বিশ্বাস করি কিছুই অসম্ভব নয়। আমরাও সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে মুখিয়ে আছে এবারের বিশ্বকাপে। ’