ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট আবেদন ‘উত্থাপিত হয়নি’ (নটপ্রেস) মর্মে খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, আদালত মনে করেছে—নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে হওয়ায় এ মুহূর্তে রিটের ওপর শুনানি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই রিট আবেদনটি নটপ্রেস হিসেবে খারিজ করা হয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষে দলটির মহাসচিব ও আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম রিটটি দায়ের করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বিবাদী করা হয় আবেদনে।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতিও চলছে।
রিট আবেদনে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয়। এতে বলা হয়, নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় পরিচালনা করা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নিজস্ব জনবল থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে নির্বাহী বিভাগই নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে থাকে, যা বিতর্ক সৃষ্টি করে।
রিটে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্বাহী বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাওয়ায় তাদের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের দিয়ে সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।
এছাড়া জেলা নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ কেন কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না—সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ইসি সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব জনবল থেকে পদোন্নতির ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি জানানো হয় ‘ইলেকটোরাল সার্ভিস কমিশন’ গঠনের প্রস্তাবসহ।
রুল জারি হলে বিচারাধীন অবস্থায় নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত রাখারও আবেদন করা হয়েছিল।
রিটকারী আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ডিসিদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার ইঙ্গিত ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। এটি হলে নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা আবারও দেখা দেবে। জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের যুক্ত করা না হলে এবং ইসি সচিবকে অপসারণ না করলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।