ঢাকা প্রেস নিউজ
ওয়াশিংটনভিত্তিক অর্থিক খাতের গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি (জিএফআই) প্রতিবেদন........
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হওয়া একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি (জিএফআই) এর মতে, দেশটি থেকে প্রতি বছর গড়ে ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এই অর্থের একটি বড় অংশই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বিভিন্ন দেশে পাচার করা হচ্ছে।
এই অর্থপাচার দেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা— এই সমস্যাগুলোর মূলে অর্থপাচারের একটি বড় অবদান রয়েছে। পাচারকৃত এই অর্থ দেশের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা যেতে পারত, যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নে।
বৈশ্বিক বাণিজ্যভিত্তিক কারসাজি, হুন্ডি, চোরাচালানসহ নানাবিধ পন্থায় এই অর্থ পাচার করা হচ্ছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় ব্যাংকগুলোতে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমেও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এই অপরাধে ব্যক্তিদের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই চুক্তিগুলো কার্যকর করার জন্য সরকারকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার করার জন্য দেশের বিভিন্ন এজেন্সি এবং বিদেশের নেটওয়ার্কগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। আইনজ্ঞরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই কাজে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার একটি জটিল সমস্যা। এই সমস্যা মোকাবেলায় সরকারকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের পাশাপাশি, অর্থপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।