জান্নাতের মেহমান হওয়ার সহজ আমল

প্রকাশকালঃ ১৯ আগu ২০২৩ ০৫:৩৪ অপরাহ্ণ ২৪৭ বার পঠিত
জান্নাতের মেহমান হওয়ার সহজ আমল

কিছু আমল এমন আছে, যেগুলো করতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না, অনেক জ্ঞানের অধিকারীও হতে হয় না। কিন্তু এগুলোর ফজিলত অনেক বেশি। এগুলো বান্দার আমলনামাকে ভারী করে। যেমন—রাসুল (সা.) বলেছেন, যে লোক (একবার) বলে সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়াবিহামদিহী, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ লাগানো হয়।(তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬৪)

ছোট এই বাক্যটি পড়তে খুব বেশি সময় লাগে না। কিন্তু আল্লাহ এতই মহান যে তিনি এর বিনিময়ে তাঁর প্রিয় বান্দার জন্য জান্নাতে খেজুরগাছ লাগিয়ে দেন। এমন ছোট অনেক আমলের মাধ্যমে বান্দা জান্নাতের মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করতে পারে। আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে তাকে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বিষয় বাধা দিতে পারে না।(তাবরানি, হাদিস : ৭৫৩২, সহিহুল জামে, হাদিস : ৬৪৬৪)


প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার আয়াতুল কুরসি পড়তে ১৫ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগার কথা নয়। আল্লাহ এতই মহান যে তিনি তাঁর বান্দার মাত্র ১৫ সেকেন্ডের আমলের বিনিময়ে তাকে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নেন। কিন্তু আমরা সবাই জানি যে যাদের অন্তরে শিরকের বিষ থাকবে মহান আল্লাহ তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না।

রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের এমন একটি দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন, যে আমলটি করতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড প্রয়োজন হয়। মাকিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর সঙ্গে নবী (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি বলেন, হে আবু বকর! নিশ্চয়ই শিরক পিপীলিকার পদচারণ থেকেও সন্তর্পণে তোমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। আবু বকর (রা.) বলেন, কারো আল্লাহর সঙ্গে অন্য কিছুকে ইলাহ রূপে গণ্য করা ছাড়াও কি শিরক আছে? 

নবী (সা.) বলেন, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! শিরক পিপীলিকার পদধ্বনির চেয়েও সূক্ষ্ম। আমি কি তোমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দেব না, তুমি যা বললে শিরকের অল্প ও বেশি সবই দূর হয়ে যাবে? তিনি বলেন, তুমি বলো, (আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আলামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আলামু) ‘হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সঙ্গে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই।’ (আদবুল মুফরাদ, হাদিস : ৭২১)


এ ছাড়া আরেকটি এমন আমল আছে, যার মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডে সব কবিরা গুনাহ থেকে পবিত্র হওয়া যায়। জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, যে লোক বলে, (আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি) ‘আল্লাহ তাআলার কাছে আমি ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, যিনি চিরজীবী, চিরস্থায়ী এবং আমি তাঁর কাছে তাওবা করি’, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যদিও সে রণক্ষেত্র থেকে পলায়ন করে থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৭৭)

সুবহানাল্লাহ! এভাবেই মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের পাপমুক্ত করে জান্নাতে প্রবেশ করানোর জন্য অবারিত সুযোগ রেখে দিয়েছেন। আমাদের দায়িত্ব সেগুলো লুফে নেওয়া। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।