কুড়িগ্রামে ধরলার ভাঙ্গনে বিলীন শতাধিক পরিবার

প্রকাশকালঃ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ ৩৮৬ বার পঠিত
কুড়িগ্রামে ধরলার ভাঙ্গনে বিলীন শতাধিক পরিবার

ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

 

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র হয়ে উঠেছে ধরলা নদীর ভাঙন। এতে গত দুই সপ্তাহে ঘর বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। গত একমাসের বেশি সময় ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এদিকে এই পরিস্থিতিতে শুধু ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে দায় সারছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, নদী ভাঙনে কবলে পড়ে কেউ সরাচ্ছেন ঘর বাড়ি, আবার কেউ বা গাছপালা। একের পর এক ভাঙছে ফসলি জমিও। এমন অবস্থায় চরম কষ্টে দিন পার করছেন ভুক্তভোগীরা।

 

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের সরকার পাড়া থেকে মোল্লার হাটের পাশের নুরুন্নাহার স্কুল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার ধরলার বাম তীরে গত ১ মাস ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকায় বসতভিটা, গাছপালা ও ফসলি জমি হারিয়েছেন অসংখ্য পরিবার।

 

আবার ভাঙনের মুখে পড়া পরিবারগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন ঘর বাড়ি ও আসবাবপত্রসহ বাগানের গাছপালা। নতুন করে মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটছে অনেক পরিবারের। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করলেও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ভাঙন কবলিতদের।

 

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের সরকার পাড়া এলাকার সমশের আলী জানান, গত এক সপ্তাহে বেগমগঞ্জের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে অন্তত একশত বাড়ি ধরলার ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। আমার বাড়ির অর্ধেক সরিয়েছি। বাকি অর্ধেকও সরানোর কাজ করছি। চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের যাওয়ার জায়গা পর্যন্ত নেই। মানুষের জায়গায় আপাতত ঘর-বাড়ি সরিয়ে রেখেছি।

 

একই এলাকার আবুল হোসেন জানান, এখানে মসজিদ ছিল, পাকা বাড়ি ছিল সব গেছে। যদি এখনেই ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে এই সরকারপাড়া গ্রামসহ পাশের গ্রামগুলোও থাকবে না।

 

ভাঙনরোধে কোনো প্রতিকার না দেখে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে হুমকিতে থাকা পরিবারগুলোর। এই পরিস্থিতিতে নদী ভাঙনরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি তাদের।

 

বেগমগন্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নে তিনদিক থেকে নদী ভাঙন চলছে। একদিকে ব্রহ্মপুত্র, একদিকে দুধকুমার আর অন্যদিকে ধরলা। বর্তমানে ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে ধরলার তীব্র ভাঙন চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসনকে বার বার বলার পরেও কোনো কাজ হচ্ছে না। সরকার যদি দৃষ্টি না দেয় তাহলে এই ইউনিয়নের মানচিত্র বদলে যাবে। আমি চাই ইউনিয়নটি রক্ষায় সরকার যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

 

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান ভাঙ্গনের কথা স্বীকার করে জানান, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনবসতিপূর্ণ এলাকা রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার নদের সকল ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হবে।

 

এছাড়াও গত তিন মাসে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও দুধকুমার নদের ভাঙনে বসতভিটা হারিয়েছে প্রায় ৭ শতাধিক পরিবার।