ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) প্রকল্পের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বুধবার রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রকল্পের কয়েকজন তালিকাভুক্ত নারী। ইউএনও তানভীর আহমেদ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ১ হাজার ১৫০ জন দুস্থ নারী ভিডব্লিউবি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত হন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে তারা জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। কিন্তু ইউনিয়নের রাজিয়া (কার্ড নং ৫৬২), এসমেতারা (কার্ড নং ৩১৬) ও আসমাসহ (কার্ড নং ৯৮৩) তালিকাভুক্ত ও কার্ডধারী প্রায় ২০০ নারীর কয়েক মাসের চাল বকেয়া রয়েছে। চাল না পেয়ে বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ‘চাল আসেনি’ বলে জানান তারা। পরে বঞ্চিতরা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন প্রতিমাসে বরাদ্দের চাল পরিষদে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বঞ্চিত নারীরা দাবি করেছেন, ভিজিডি চক্রের মাস্টার রোলে তাদের নাম, বাবা/স্বামীর নাম ঠিকানা ঠিক থাকলেও আঙুলের ছাপ পরিবর্তন করে কয়েক মাস থেকে চাল উত্তোলন করেছে অন্য কেউ। তাদের নামে বরাদ্দের চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
ভিডব্লিউবি প্রকল্পে চাল নিয়ে এমন জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর অনেকে অভিযোগ করছেন, ইউনিয়নে অনেক ভাতাভোগী এমন বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। আবার অনেকেই জানেন না তাদের নামে ভিজিডি কার্ড রয়েছে। এ রকম প্রায় ৪২ কার্ডধারী গত জুন মাসের বরাদ্দ চাল পাননি।
অভিযোগকারী রাজিয়া ও আসমা বলেন, বন্যার মধ্যে চালের জন্য আইসা ঘুরে গেছি। চেয়ারম্যান চাল দেয় নাই। চাল কেননের সামর্থ্য নাই। আমরা চাল চাই। চাল চোরের বিচার চাই।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পরিষদে অনুপস্থিত থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, ‘এ ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি কার্ডধারী ১ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ১০৮ জনকে জুন মাসের চাল দেওয়া হয়েছে। বাকিরা এখনও জুন মাসের চাল নিতে আসেননি। আবার গত কয়েক মাসের চাল অনেক কার্ডধারীই পায়নি। তারা আমাকে আগের মাসগুলোর চালের জন্য চাপ দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জেবুন নেছা বলেন, গত জুন পর্যন্ত প্রতি মাসে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কার্ডধারী কারও চাল না পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কেউ চাল না পেয়ে থাকলে তা আমাদের জানাতে হবে।
ইউএনও তানভীর আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’ বুধবার পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পরিষদে যোগ দেননি বলেও জানান ইউএনও।