পৃথিবীর অবস্থান যে ছায়াপথে অর্থাৎ মিল্কিওয়ে’তে দেখা মিলেছে বিশাল এক ব্যাখ্যাতীত বস্তুর। গবেষকদের মতে, এটা হয়ত এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা বৃহত্তম নিউট্রন তারা বা সবচেয়ে বড় কৃষ্ণগহ্বরগুলোর মধ্যে ছোট। যাই হোক, এ অনুসন্ধান মহাবিশ্ব সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
কোনো নিউট্রন তারা আকারে অনেক বড় হয়ে যায় যখন অন্য কোনো তারার সঙ্গে সেটি মিলে যায়। আর এরপর সে তারা ধ্বংস হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা জানেন না এরপর ওই তারার কী হয়। তবে, প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, এমন তারাগুলো সম্ভবত ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
জোতির্বিদদের মতে, নিউট্রন তারার ভর সূর্যের চেয়ে দুই দশমিক দুই গুণ বড়। আর এর পরবর্তী অবস্থায় যেসব ব্ল্যাক হোল সৃষ্টি হয়, সেগুলোর আকার এর চেয়েও বড় হয়ে থাকে, অন্তত সূর্যের চেয়ে পাঁচ গুণ বড়।
এর মধ্যে যে শূন্য জায়গাটি থাকে, তা ‘ব্ল্যাক হোল ম্যাস গ্যাপ’ নামে পরিচিত। আর শূন্য জায়গাটি কীভাবে পূরণ হয়, তা নিয়ে সঠিক ধারণা নেই বিজ্ঞানীদের।
নতুন অনুসন্ধানে পাওয়া বস্তুটি ওই শূন্যস্থানের একেবারে নীচের অংশে অবস্থান করছে, যা প্রায় দুই দশমিক এক থেকে দুই দশমিক সাত সৌর ভর বা ‘সোলার মাস’-এর সমান হতে পারে। ফলে বস্তুটি শনাক্ত করতে সমস্যার মুখে পড়ছেন জোতির্বিদরা। তবে, সেটি যাই হোক, এর সম্পর্কে সঠিক ধারণা ওই রহস্যময় শূন্য জায়গার সমাধান দিতে সহায়ক হবে।
বস্তুটি খুঁজে পাওয়া গেছে ক্রমাগত ঘুর্ণায়মান পালসার নক্ষত্রের আশপাশের এক কক্ষপথে, যা পৃথিবী থেকে ৪০ হাজার আলোকবর্ষ দূরের এক ঘন নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত। আর এর অনুসন্ধান চালাতে ‘রিদমিক স্পিনিং’ নামের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন জোতির্বিদরা।
এ রহস্যময় বস্তুটি শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত ‘মিরক্যাট’ নামের রেডিও টেলিস্কোপে, যখন এটি ‘এনজিসি ১৮৫১’ নামের আদিম নক্ষত্রপুঞ্জ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিল। আর এ নক্ষত্রগুলো এতটাই ঠাসা অবস্থায় আছে যে কখনও কখনও এগুলোর মধ্যে সংঘর্ষও ঘটে থাকে।