অনলাইন ডেস্ক:-
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারপ্রক্রিয়া ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি, কর কর্মকর্তাদের আন্দোলন এবং সামগ্রিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সংস্থাটির নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
রোববার (২৯ জুন) বাংলাদেশের জন্য অনুমোদিত ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইএমএফের ঢাকা মিশনের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মিশন প্রধান আইভো ক্রিজনার ও বাংলাদেশে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে।
ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, “আমরা এনবিআরের সংস্কারপ্রক্রিয়া ঘিরে চলমান ঘটনাপ্রবাহ সতর্ক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছি। এনবিআর চেয়ারম্যান আমাদের নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানাচ্ছেন। সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য।”
আইএমএফ দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব নীতি ও প্রশাসন পৃথক করার সুপারিশ দিয়ে আসছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকার সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ জারি করলেও, এনবিআরের কর্মকর্তারা এর বিরোধিতা করে চেয়ারম্যানের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে দেশব্যাপী 'শাটডাউন' কর্মসূচি শুরু করেন। এতে রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে আইএমএফ প্রদত্ত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে পাপাজর্জিও বলেন, “আমরা আশাবাদী। তবে এ লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হলে সরকারকে তার সংস্কার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং জনসাধারণের স্বীকৃতি ও সমর্থনও প্রয়োজন।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়েও মন্তব্য করেন আইএমএফ মিশন প্রধান। তিনি বলেন, “বর্তমান সময়টি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামনে নির্বাচন রয়েছে, পাশাপাশি রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক ও স্থানীয় পর্যায়ের নানা অনিশ্চয়তা, যা বিনিয়োগে প্রভাব ফেলতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নই। তবে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার মাধ্যমে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, তা কিছুটা দূর হয়েছে। আমরা আশা করি, এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে।”
আইএমএফ প্রতিনিধির মতে, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ এখনও আশানুরূপ নয়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নির্বাচনী অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠলে বিদেশি বিনিয়োগ আগমনের পথ প্রশস্ত হবে বলে তাদের প্রত্যাশা।