ইলিশের দাম ঠিক না থাকলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না — উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:২৫ অপরাহ্ণ   |   ৭৮ বার পঠিত
ইলিশের দাম ঠিক না থাকলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না — উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

নিউজ ডেস্ক:-

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশ একটি বৈশ্বিক সম্পদ, এবং এই মাছের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হলে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের পরিচিতি বৃদ্ধি করবে। তিনি বলেন, “ইলিশ বিশ্বের ১১টি দেশে পাওয়া যায়, যার মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে। ইলিশ আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।”
 

তিনি আরও বলেন, “জুন মাসের পর বাজারে ইলিশ আসবে, তখন যেন এর দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে — তা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না।”
 

শনিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই), শিরোনাম ছিল: ‘ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রজনন সাফল্য নিরুপণ, জাটকা সংরক্ষণ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’
 

প্রাকৃতিক প্রজননের ওপর গুরুত্ব

উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখনই ইলিশের কৃত্রিম প্রজননের পথে যেতে চাই না। প্রাণিসম্পদে কৃত্রিম প্রজননের ফল খুব বেশি ইতিবাচক হয়নি। ইলিশ প্রাকৃতিক মাছ — এটিকে প্রাকৃতিকভাবেই রক্ষা করা ভালো।”
 

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা ও বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের সঙ্গে ইলিশের ডিম ছাড়ার সম্পর্ক রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে গবেষকদের আরও গভীরভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
 

সচেতনতা ও নিরাপত্তা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “যদি ৯৫ শতাংশ জেলে নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ না ধরে, তাহলে বাকি অংশটুকু আমরা নিশ্চয়ই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।” তিনি জলদস্যুদের হুমকি নিয়েও কথা বলেন এবং বলেন, “দস্যুদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, জেলেদের জন্য বরাদ্দ মানবিক সহায়তা যেন প্রকৃত জেলেরাই পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।”
 

রপ্তানি ও স্থানীয় ভোগ

তিনি জানান, এক মৌসুমে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ইলিশ রপ্তানি করা সম্ভব। তবে আগে দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করে তবেই রপ্তানির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
 

জাটকা সংরক্ষণে সচেতনতা

পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জাটকা ও ইলিশ এক নয় — এই সচেতনতা সবার থাকা উচিত। পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খেতে গিয়ে আমরা যেন জাটকা খেয়ে বসি না।”
 

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ।
 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর ড. ইয়ামিন চৌধুরী ও মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী।