চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন মাশুল হার কার্যকরের সিদ্ধান্ত এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজিত ‘কাস্টমস ও বন্দর ব্যবস্থাপনা: সম্ভাবনা, সমস্যা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, “শুল্ক ও মাশুলের বিষয়টি আমরা আরও এক মাস পিছিয়ে দিচ্ছি। এ নিয়ে বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, এবং আমরা সম্মত হয়েছি।”
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সেবা খাতে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা পরদিন থেকেই কার্যকর হয়। বর্তমানে বন্দরের মোট ৫২টি খাত থেকে মাশুল আদায় করা হয়, এর মধ্যে ২৩টি খাতে সরাসরি বর্ধিত ট্যারিফ কার্যকর করা হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ভাড়া, টোল, রেইল, ফি ও মাশুল ডলারের বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১২২ টাকা) ভিত্তিক করে আদায় করার নিয়ম চালু হয়। ডলারের মান বাড়লে মাশুলও বাড়বে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে কনটেইনার পরিবহন খাতে। ২০ ফুট কনটেইনারের মাশুল ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকায়, যা গড়ে ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি।
এছাড়া আমদানি কনটেইনারে ৫ হাজার ৭২০ টাকা এবং রপ্তানি কনটেইনারে ৩ হাজার ৪৫ টাকা অতিরিক্ত মাশুল ধার্য করা হয়েছে। প্রতিটি কনটেইনার ওঠানো-নামানোর ক্ষেত্রে প্রায় তিন হাজার টাকা বাড়ানো হয়। কনটেইনারের প্রতি কেজি পণ্যের জন্যও মাশুল আগের ১ টাকা ২৮ পয়সা থেকে বেড়ে ১ টাকা ৭৫ পয়সা হয়েছে। সার্বিকভাবে কনটেইনার পরিবহন খাতে মাশুল বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৫ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে সেবা খাতে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছিল। প্রায় চার দশক পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে এই হার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়।
দেশে আমদানি-রপ্তানিনির্ভর সমুদ্র বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ এবং কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনের ৯৮ শতাংশ হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে, এবারের মাশুল বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে কনটেইনার পরিবহন খাতে।