কুমিল্লা প্রতিনিধি:-
কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম জোড়কান্দা ইউনিয়নের ভাটপাড়া এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘবদ্ধ হামলার শিকার হয়েছেন একই পরিবারের কয়েকজন সদস্য। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন পরিবারের কর্তা মো. শাহাজান মিয়া (৬৩)। এছাড়াও তার কন্যা রোকসানা আক্তার (৩২), তানিয়া আক্তার (২২), ফারজানা বেগম (২৪), তাহমিনা বেগম (৫২) আহত হন। বর্তমানে গুরুতর আহত শাহাজান মিয়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত রোকসানা আক্তার বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পূর্বে তাদের পারিবারিক বিরোধের জেরে কোর্টে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা চলমান রয়েছে (সি.আর ৩৮/২৫)। সেই মামলার প্রতিশোধ নিতে বিবাদীরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায়।
বাদীর অভিযোগে জানা যায়, গত ১ জুলাই ২০২৫ খ্রিঃ, সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিযুক্ত সরিয়ত উল্লাহ (৩০), আফজল উল্লাহ (৩২), শিউলী বেগম (৪০), শিরিনা বেগম (২৬), সাগর (১৮) এবং আরও ৩–৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি একত্রিত হয়ে বাদীর বাবার বাড়ির সামনে প্রকাশ্যে হামলা চালায়। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাহাজান মিয়ার ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায় এবং ধারালো চাপাতি দিয়ে তার মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
হামলার সময় শাহাজান মিয়ার মেয়েরা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করে হামলাকারীরা। অভিযোগে বলা হয়, এ সময় রোকসানার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন (মূল্য প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা) এবং তার বোনের গলায় থাকা ৮ আনা স্বর্ণালঙ্কার (মূল্য আনুমানিক ৮৫ হাজার টাকা) ছিনিয়ে নেয় তারা। একই সঙ্গে নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে শাহাজান মিয়ার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, "লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
মামলা বাদী রোকসানা আক্তার বলেন, সরিয়ত উল্লাহ এর সাথে ৭ বছর পূর্বে আমার বিয়ে হয়। সে বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ী থেকে টাকা পয়সা নেয়ার জন্য আমাকে মারধর করত। আমি অনেকবার তাকে বাবার বাড়ী থেকে টাকা পয়সা নিয়ে দিয়েছি। সে কারণে অকারনে আমাকে মারধর করত। আমার তার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আহত পরিবারটি সুষ্ঠু তদন্ত ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।