মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদ্যাপনকে স্মরণীয় করে তুলতে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বরেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার একযোগে পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং করবেন। এটি হবে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের রেকর্ড, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক এক সভায় এই কর্মসূচির বিস্তারিত জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টা থেকে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর পৃথক ফ্লাই পাস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে শুরু হবে ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং। সাধারণ দর্শকদের জন্য পুরো অনুষ্ঠান উন্মুক্ত থাকবে। একই সঙ্গে দেশের অন্যান্য শহরেও সশস্ত্র বাহিনীর ফ্লাই পাস্ট ও ব্যান্ড-শোর আয়োজন করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয়মেলা অনুষ্ঠিত হবে। শিশুদের অংশগ্রহণে রচনা, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আকরোবেটিক শো এবং যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’ মঞ্চস্থ হবে। ১৬ ডিসেম্বর একই স্থানে পরিবেশিত হবে বিজয় দিবসের বিশেষ গান। এছাড়া ৬৪ জেলায় একযোগে নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা গাইবেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান।
উদ্যাপন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, “বিজয় দিবস বাংলাদেশের গৌরবের দিন। সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।” সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “এবারের বিজয় উদ্যাপন নতুন প্রজন্মের কাছে এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।”
বিজয় দিবসে তথ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। সরকারি-বেসরকারি ভবন, বিদেশি মিশন ও দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোকসজ্জা করা হবে। যথারীতি ৩১বার তোপধ্বনি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ অনুষ্ঠান এবং জেলা-উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন নৌঘাঁটিতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকাসহ সারাদেশের সিনেমা হলে শিক্ষার্থীরা বিনা টিকেটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখতে পারবে। সব জাদুঘর ও বিনোদনকেন্দ্র শিশুদের জন্য বিনা টিকেটে উন্মুক্ত থাকবে।
দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি হাসপাতাল, কারাগার, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা ও বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণকেন্দ্রে বিশেষ প্রীতিভোজের ব্যবস্থা থাকবে।
সূত্র: বাসস