২০০ বছরের ইতিহাস বহন করছে সালথার বাউশখালী জমিদার বাড়ি

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৩০ অপরাহ্ণ   |   ৩০ বার পঠিত
২০০ বছরের ইতিহাস বহন করছে সালথার বাউশখালী জমিদার বাড়ি

অনলাইন ডেস্ক:-


 

ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার বল্লভদি ইউনিয়নের বাউশখালী জমিদার বাড়ি এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় দুই শতাব্দী আগে নির্মিত এই স্থাপনাটি একসময় ছিল জমজমাট জনপদের প্রাণকেন্দ্র, কিন্তু এখন তা কেবল নিঃসঙ্গ অতীতের এক নিদর্শন।
 

ধারণা করা হয়, প্রায় ১৭৬০ সালের দিকে সিংহ পরিবার এখানে বসবাস শুরু করে। যদিও প্রাথমিক জমিদারদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, তবে ১৮৫৯ সালে জন্ম নেওয়া যতীন্দ্ৰনাথ সিংহ রায় বাহাদুর এই বংশের উজ্জ্বলতম ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। স্ত্রী সরোজিনী সিংহসহ তিনি আজীবন এ জমিদার বাড়িতে বসবাস করেছেন। তবে তাদের সমাধিস্থলের স্থান আজও অজানা।
 

যতীন্দ্ৰনাথের একমাত্র পুত্র সুরেন্দ্রনাথ সিংহ কলকাতায় চলে গেলেও তাঁর ছেলে সত্যজিৎ সিংহ (বৈদ্যনাথ বাবু) ১৯৫২ সালে স্ত্রী রেখা রাণী সিংহকে নিয়ে ফিরে আসেন বাউশখালী জমিদার বাড়িতে। সমাজসেবক হিসেবে তিনি হাট-বাজার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে জমি দান করে স্থানীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন। সত্যজিৎ সিংহ ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর এবং তাঁর স্ত্রী ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁদের দুজনকেই জমিদার বাড়ির পাশের দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।
 

বর্তমানে সিংহ পরিবারের কেউ বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না। তবে রেখা রাণী সিংহ তাঁদের সম্পত্তি রাধাগোবিন্দের নামে দান করে যান, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ থাকে।
 

জমিদার বাড়ির নির্মাণশৈলীতে চুন-সুরকি, ইট, কাঠ ও লোহার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এখানে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন মন্দির এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুটি পুরনো ভবন। একসময় সোনা-রুপার অলংকার ও প্রাচীন আসবাবপত্রে ভরপুর ছিল বাড়িটি; এখন সেখানে শুধু নীরবতা আর ভগ্নস্মৃতির ছাপ।
 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহীন বলেন, “এখন জমিদার বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। যথাযথ সংস্কার করে এটিকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা গেলে এটি এলাকার ঐতিহাসিক পর্যটনস্থল হিসেবে গুরুত্ব পেতে পারে।”