পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, রণক্ষেত্র কিশোরগঞ্জ

প্রকাশকালঃ ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৬:৪৩ অপরাহ্ণ ১৮২ বার পঠিত
পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, রণক্ষেত্র কিশোরগঞ্জ

দযাত্রা কর্মসূচিতে কিশোরগঞ্জে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দলটি দাবি করেছে। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে শহরের রথখলা সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন নেতাকর্মীরা।

এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এভাবে ঘণ্টাখানেক দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। দুপুর দেড়টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে পরিস্থিতি শান্ত হয়।  

দুপুর ১২টায় এক দফা নিয়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি উপলক্ষে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠ থেকে একটি বিশাল পদযাত্রা বের হয়। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালসহ জেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পদযাত্রা ঘিরে শহরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। 


পদযাত্রা শুরুর আগে বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে এসে জড়ো হয়। পরে সেখান থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়। পদযাত্রাটি রথখলা এলাকায় এলে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। পুলিশ নেতাকর্মীদের রথখলা মাঠে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করার তাগিদ দেয়। কিন্তু নেতাকর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শহর প্রদক্ষিণ করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের কিছু অংশ বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যায়।

আর পুলিশের দিকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তখন পুলিশও শটগান থেকে ফাঁকা গুলি চালাতে থাকে। চলতে থাকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। তখন পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।  আতঙ্কে ওই এলাকার দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচলও। এভাবে দফায় দফায় চলতে থাকে সংঘর্ষ।

পুলিশ বলছে, বিনা কারণে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বিএনপির লোকজন। তাদের মধ্যে অতিউৎসাহী নেতাকর্মীদের মারমুখী আচরণের কারণে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।                     


কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির পদযাত্রাটি প্রথমে শান্তিপূর্ণই ছিল। পুলিশ তাদের ওই কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছিল। কিন্তু রথখলা এলাকায় পদযাত্রাটি গেলে আমরা তাদের রথখলা মাঠে গিয়ে কর্মসূচিটি শেষ করার অনুরোধ করি। বিএনপির নেতারা বলেছিলেন, তারা গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে কর্মসূচি শুরু করে রথখলা মাঠে গিয়ে শেষ করবেন। 

পুলিশ এভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু তারা সে কথা না রেখে শহরের আরো ভেতরে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা তাদের বাধা দিই। কিন্তু অতিউৎসাহীরা হঠাৎ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করে। তিনি জানান, বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। ঠিক কতগুলো গুলি করা হয়েছে তার হিসাব করা হয়নি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

তবে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ অহেতুক বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমাদের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী কম-বেশি আহত হয়েছেন।