বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মাকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখার অভিযোগে ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড ছেলে নয়, বরং বাড়ির ভাড়াটিয়া ঘটিয়েছে।
১১ নভেম্বর, বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন ‘আজিজয়া মঞ্জিল’ নামের বাড়িতে উম্মে সালমা নামের এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে সাদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। র্যাব দাবি করে, হাত খরচের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সাদ তার মাকে হত্যা করেছে এবং লাশ ফ্রিজে রেখেছে।
তবে ১৫ নভেম্বর পুলিশ নতুন তথ্য প্রকাশ করে জানায়, উম্মে সালমাকে হত্যার পেছনে মাবিয়া সুলতানা নামের ভাড়াটিয়া জড়িত।
নিহতের স্বামী আজিজুর রহমান দাবি করেন, সাদকে র্যাব জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করেছে। তিনি জানান, ১১ নভেম্বর জানাজার পর র্যাব তাদের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সাদকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ এবং টর্চার করা হয়, যা হয়তো তাকে মাকে হত্যার মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করেছে।
তিনি আরও বলেন, “আমার ছেলেটি শান্তশিষ্ট, সে কখনো এ ধরনের কাজ করতে পারে না। হত্যার আসল রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা বারবার ভাড়াটিয়া মাবিয়ার বিষয়টি বলেছি। কিন্তু র্যাব বিষয়টি আমলে নেয়নি।”
র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন আজিজুর রহমান। তার ভাষ্য, “রাষ্ট্রের একটি দায়িত্বশীল সংস্থা থেকে এমন আচরণ আশা করিনি। তারা আমার ছেলের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা পুরোপুরি নষ্ট করেছে।”
র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে ছেলের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। উম্মে সালমা হত্যাকাণ্ডের মূল সন্দেহভাজন মাবিয়া সুলতানা।
পরিবারের সদস্যরা সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেছেন, “আমরা চাই প্রকৃত অপরাধী শাস্তি পাক, আর নিরপরাধ কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”
এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। সঠিক তদন্ত ও নিরপেক্ষ বিচার দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে।