শবেকদরে বরকত লাভের চার আমল

প্রকাশকালঃ ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৫৩ অপরাহ্ণ ৩১৪ বার পঠিত
শবেকদরে বরকত লাভের চার আমল

মাহে রমজান মাসের মর্যাদার অন্যতম দিক ‘লায়তুল কদর’ বা কদরের রাত। এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রাতে। আর মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে তুমি কি জানো? মহিমান্বিত রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা কদর, আয়াত : ১-৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত্রি জাগবে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস :  ৩৫)


‘কদর’ অনুসন্ধানে চার আমল

হাদিসের আলোকে ‘লায়লাতুল কদর’ অনুসন্ধানে চারটি আমলের কথা বলেছেন। তা হলো—

১. ভেতর ও বাহিরের পবিত্রতা : লায়লাতুল কদরের বরকত লাভের প্রধান শর্ত ভেতর ও বাহিরের পবিত্রতা লাভ এবং একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হওয়া। কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং সালাত কায়েম করতে ও জাকাত দিতে, এটাই সঠিক দ্বিন।’ (সুরা বাইয়িনাহ, আয়াত : ৫)


আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি বলেন, ‘উত্তম হলো যে রাতে ‘কদর’ অনুসন্ধান করা হবে তাতে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, গোসল-সুগন্ধি-উত্তম কাপড়ের মাধ্যমে সৌন্দর্য বর্ধন করা। আর বাহ্যিক সৌন্দর্য সৌন্দর্যের জন্য যথেষ্ট নয়, যদি না মানুষের ভেতরটা সুন্দর হয়। মানুষের ভেতর সুন্দর হয় তাওবা ও আল্লাহমুখী হওয়ার মাধ্যমে।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৮৯)

২. রাতে নামাজ ও ইবাদত : রাসুলুল্লাহ (সা.) কদরের রাতে ইবাদত ও নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষত তাহাজ্জুদের নামাজের মাধ্যমে মুমিন কদরের রাতের বরকত অনুসন্ধান করবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত্রি জাগবে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৫)

৩. ক্ষমাপ্রার্থনা : আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি জানতে পারি লায়লাতুল কদর কোনটি, তাহলে আমি সে রাতে কী বলব? তিনি বলেন, তুমি বোলো, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউয়ুন কারিমুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি। অর্থ : হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৩)

৪. প্রত্যেক বিজোড় রাতে ইবাদতে মগ্ন থাকা : যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সা.) লায়লাতুল কদর অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন, তাই শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোড় রাতকে ইবাদতের জন্য অবসর রাখা এবং তাতে ইবাদতে মগ্ন থাকা উত্তম। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কোরো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০১৭)

আল্লাহ সবাইকে লায়লাতুল কদরের বরকত ও অনুগ্রহ দান করুন। আমিন