সুরুজ আলী, বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের বড়াইগ্রামে নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় আব্দুর রশিদ (৫০) নামের এক আইনজীবীকে স্থানীয়রা তার নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করেছে। ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালায় ওই আইনজীবী এবং আরও ২-৩ সহযোগী। এই ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার হারোয়া গ্রামে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন ধরে মামলা বাজি এবং উচ্চ সুদে ঋণ দিয়ে সাধারণ মানুষকে শিকার করে আসছিলেন। এছাড়া তিনি একাধিকবার বিবাহ বহির্ভূতভাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে নিজের বাড়িতে রেখে আপত্তিকর আচরণ করতেন। এ খবর জানার পর এলাকাবাসী তাকে এবং নারীকেও একই কক্ষে অবরুদ্ধ করে।
ঘটনার খবর পেয়ে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার নাটোর জেলা প্রতিনিধি ও বড়াইগ্রাম ইউনিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ মাহবুব হোসেনসহ ছয়জন সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহের জন্য রশিদের বাড়িতে যান। তখন তারা আব্দুর রশিদকে নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন। আইনজীবী হিসেবে তার বিবাহ বহির্ভূত আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করলে রশিদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে তিনি এবং তার ভাই দুলাল নারীর সঙ্গে মিলিত হয়ে বাঁশের লাঠি নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়।
এই হামলায় এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মোঃ ওমর ফারুকের মাথা ও গালে গুরুতর আঘাত লাগে এবং তিনি রক্তাক্ত হন। এছাড়া অন্য সাংবাদিকদেরও হুমকি এবং আঘাত করার চেষ্টা করা হয়। অভিযুক্তরা সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেয় এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল দেওয়ার ভয় দেখায়। স্থানীয়দের সহায়তায় সাংবাদিকরা প্রাণে রক্ষা পান।
পরবর্তীতে স্থানীয় থানা পুলিশকে মুঠোফোনে অবহিত করলে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রাজীব ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে অভিযুক্ত আব্দুর রশিদ তখন পালিয়ে যান। আহত সাংবাদিক ওমর ফারুককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। হামলার ঘটনা সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় আহত সাংবাদিক মোঃ মাহবুব হোসেন বড়াইগ্রাম থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন জানান, সাংবাদিকদের ওপর হামলার এজাহার পাওয়া গেছে। ভিডিও ফুটেজও দেখা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।