নারী-পুরুষের সম-মজুরির দাবিতে শ্রমজীবী নারীদের মানববন্ধন

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:২১ অপরাহ্ণ   |   ৮৯ বার পঠিত
নারী-পুরুষের সম-মজুরির দাবিতে শ্রমজীবী নারীদের মানববন্ধন

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

শ্রমজীবী নারী ও অধিকারকর্মীরা শ্রম আইনে নারী-পুরুষের সম-মজুরি নিশ্চিতকরণ, নারী শ্রমিকের স্বীকৃতি, ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি, যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা কার্যকরকরণ এবং ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের আইন প্রণয়নসহ ১১ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
 

সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’-এর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মিছিল করে তাদের কর্মসূচি শেষ করেন।
 

১১ দফা দাবির মূল বিষয়সমূহ:

  • নারী-পুরুষের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করা।
  • অপ্রাতিষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের আইনি স্বীকৃতি নিশ্চিত করা।
  • শ্রমজীবী ও পেশাজীবী নারীদের জন্য ছয় মাসের পূর্ণ বেতনের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা।
  • কারখানা ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা ও অভিযোগ সেল কার্যকর করা।
  • ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের শর্ত শিথিল করে মতপ্রকাশের অধিকার বাস্তবায়ন করা।
  • কর্মস্থলে ডে-কেয়ার সুবিধা, স্বল্পমূল্যে ক্যান্টিন, লন্ড্রি ও কাপড় ধৌতাগার স্থাপন করা।
  • কৃষি ও মৎস্যজীবী নারী শ্রমিকদের স্বীকৃতি প্রদান।
  • গৃহশ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন।
  • যৌনকর্মীদের হয়রানি বন্ধ এবং তাদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা।
  • প্রবাসী নারী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
     

বক্তাদের বক্তব্য: নারী মুক্তিকেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, “বর্তমান শাসনব্যবস্থায় নারীর প্রতি বৈষম্য এখনও বিদ্যমান। যোগ্য নারীদের নেতৃত্বে দেখা যায় না, যা দুঃখজনক।”
 

সাংস্কৃতিক কর্মী ও শিক্ষক লাইকা বশীর বলেন, “এখনও নারী অধিকার নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো শুধু নারীদের দায় নয়। এটি মানবাধিকারের প্রশ্ন।”
 

ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের সুলতানা বেগম বলেন, “শ্রম আইন সংস্কার চলমান, এই সুযোগে নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়রা নূর বলেন, “নারী-পুরুষ সমান অবদান রাখলেও আইন কার্যকর না হওয়ায় নারীরা ন্যায্য সুবিধা পান না। ফাঁকফোকর বন্ধ করে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে হবে।”
 

নারী সংহতির শ্যামলী শীল বলেন, “গার্মেন্টস খাতের ৬০ শতাংশ শ্রমিক নারী, অথচ তাদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ নয়। যৌন হয়রানি বন্ধ ও ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকর করা জরুরি।”
 

নারীপক্ষের রওশন আরা বলেন, “অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করা নারীদের জন্যও ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।”
 

শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তাসলিমা আক্তার বলেন, “আমরা আশাবাদী, শ্রম আইনের সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিটি নারী শ্রমিকের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার বাস্তবায়িত হবে।”
 

এ মানববন্ধনে বক্তারা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।