বাংলাদেশ আদানি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে

প্রকাশকালঃ ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৩:৪৭ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
বাংলাদেশ আদানি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে

ঢাকা প্রেস,আন্তর্জাতিক ডেস্ক:-
 

ভারতের গৌতম আদানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের পরিমাণ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর প্রধান কারণ হিসেবে শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে। আদানি গ্রুপ ইতোমধ্যে ৩১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
 

এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সোমবার (২ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স প্রকাশ করেছে।
 

এর আগে, আদানি গ্রুপ বাংলাদেশ থেকে বকেয়া পরিশোধের দাবি জানায়, যখন বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের মুখোমুখি ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার আদানিকে জানিয়েছে, আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক রাখা হবে। তবে, পুরনো বকেয়া পরিশোধের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছেন বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
 

এটি ধারণা করা হচ্ছে, যাতে বকেয়া অর্থের বোঝা আরও না বাড়ে, সেজন্যই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, শীতকালের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ ক্রয় কমানো হয়েছে।
 

বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘‘আদানি আমাদের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় আমরা হতবাক ও ক্ষুব্ধ। তবে, শীতকালে বিদ্যুৎ চাহিদা কম থাকায় আমরা তাদের বলেছি, দুটি ইউনিট চালানোর প্রয়োজন নেই।’’
 

২০১৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সই হওয়া ২৫ বছরের চুক্তির অধীনে ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত আদানি গ্রুপের ২০০ কোটি ডলারের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট রয়েছে, যার প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট।
 

আদানি গ্রুপ ছাড়া, বাংলাদেশ আরও কয়েকটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করে। সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৯.৫৭ টাকায় কেনা হলেও, আদানি গ্রুপের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কেনার দাম ১৪.৮৭ টাকা।
 

এই বিদ্যুৎ আবার বাংলাদেশে ৮.৯৫ টাকায় বিক্রি হয়, যার কারণে সরকারকে প্রতিবছর ৩,২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়।
 

আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদের ৯০ কোটি ডলার পাওনা ছিল। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কিছু অংশ পরিশোধ হলেও, বড় অংশটি এখনও বকেয়া রয়েছে। তারা বিআরডিবি ও সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং শিগগিরই বকেয়া অর্থ পরিশোধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
 

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘‘আদানির বিদ্যুতের দাম বেশি হওয়ায় সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তবে আমরা চাই, শুধু আদানি নয়, বিদ্যুতের দাম সামগ্রিকভাবে গড় খুচরা মূল্যের নিচে নেমে আসুক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আদানি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় অব্যাহত থাকবে, তবে বাংলাদেশের নিজস্ব চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট স্থানীয় সক্ষমতা রয়েছে।’’
 

যদিও গ্যাস সংকটসহ বিভিন্ন কারণে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে বা সক্ষমতার তুলনায় কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, তবুও আদানি গ্রুপের সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ার পরেও বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা হয়নি।