শুনানির সময় আইনজীবী শিশির মনির আপিল বিভাগকে জানান, সামনে দীর্ঘ আদালত ছুটি থাকলেও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, রিভিউ শুনানিটি বারবার তালিকায় আসলেও এখনও শেষ হয়নি। এ সময় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও হয়তো শুনানি শেষ করতে পারব না।” জবাবে শিশির মনির বলেন, “মাই লর্ড, একটি তারিখ নির্ধারণ হলেও আপাতত কিছুটা কাজ এগোবে।” এরপর আদালত আগামী ২৬ আগস্ট শুনানির দিন ঠিক করেন।
২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে বাতিল ঘোষণা করে। হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে দেওয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে গত বছর অক্টোবরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এর আগে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি—তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান—রিভিউ আবেদন করেছিলেন। একই বছর ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও পৃথক আবেদন জমা দেন।
২০০৮ সালে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, যেখানে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে। তবে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এরপর দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রতিবারই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে—কখনও “বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন”, কখনও “রাতের ভোটের নির্বাচন”, আবার কখনও “ডামি নির্বাচন” হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভবিষ্যতে একটি সত্যিকারের জনরায়ের ভিত্তিতে সরকার গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ ফের আলোচনায় এসেছে। এ নিয়ে জনগণ ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এক বিরল ঐকমত্য গড়ে উঠছে।