চট্টগ্রামে কাস্টমস ধীরগতির কারণে বন্দরে তীব্র কনটেইনার যট....!

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২১ আগu ২০২৫ ০৩:২০ অপরাহ্ণ   |   ৩৫ বার পঠিত
চট্টগ্রামে কাস্টমস ধীরগতির কারণে বন্দরে তীব্র কনটেইনার যট....!

বিশেষ প্রতিবেদন:-




বাংলাদেশের সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা নতুন করে ব্যাঘাত দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ খালাসের সময় (টার্নএরাউন্ড টাইম) কমলেও এবার জট তৈরি হয়েছে সমুদ্র নয়, স্থলেই—চট্টগ্রাম বন্দরে কাস্টমস জটের কারণে। বন্দর কর্তৃপক্ষ কনটেইনারবাহী জাহাজের অপেক্ষার সময় সফলভাবে হ্রাস করতে পারলেও—এই জট নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হচ্ছে।

 

বর্তমানে চট্টগ্রামে ভেড়ার আগে কনটেইনার জাহাজগুলোকে আর দিনের পর দিন সাগরে অলস বসে থাকতে হচ্ছে না। নতুন ডেডিকেটেড জেটির কারণে অপেক্ষার সময় কমেছে, আর প্রতিটি জাহাজের দৈনিক ডেমারেজ বিলসহ ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় হচ্ছে।
 

গত মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেডের অধীনে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল আসার পর থেকে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বেড়েছে এবং জাহাজের টার্নঅ্যারাউন্ড সময় পাঁচ দিন থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র দুই দিনে।
 

গত মাসের শুরু থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চিটাগাং ড্রাইডক নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের দায়িত্ব নেওয়ার পর বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বেড়েছে। জাহাজের টার্নএরাউন্ড টাইম পাঁচ দিন থেকে নেমে এসেছে দুই দিনে।
 

কিন্তু এই অগ্রগতি থমকে যাচ্ছে কাস্টমস প্রক্রিয়ায় ধীরগতির কারণে। গত ১৯ আগস্ট সকাল পর্যন্ত বন্দরের ইয়ার্ডে কনটেইনারের জায়গা ছিল ৯০ শতাংশেরও বেশি পূর্ণ। মোট ধারণক্ষমতা ৫৩,৫১৮ টিইইউ হলেও তখন সেখানে ছিল ৪৮,৫৪১ টিইইউ কনটেইনার। অথচ কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন পরিচালনার জন্য অন্তত ১৫–২০ শতাংশ জায়গা খালি রাখা দরকার।
 

কাস্টমস জটের প্রধান কারণ হলো কার্যকর স্ক্যানারের সংকট। বন্দরের ৯টি স্ক্যানারের মধ্যে চারটি অচল হয়ে পড়েছে, ফলে আমদানি কনটেইনারের গতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে এক ধরনের 'ডমিনো এফেক্ট' তৈরি হয়েছে—রপ্তানি পণ্য ডেলিভারি শেষে ট্রাকগুলো আমদানি কনটেইনার ব্যাকলোড করতে পারছে না, আর এতে ইনল্যান্ড ডিপোগুলোতে কনটেইনারের জট বাড়ছে।
 

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, "অচল স্ক্যানারের কারণে ডিপো মালিকরা প্রত্যাশিত গতিতে আমদানি কনটেইনার নিতে পারছেন না। ফলে রপ্তানি পণ্য ডেলিভারির পর ট্রাকগুলো খালি অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে, আমদানি কনটেইনার ব্যাকলোড করতে পারছে না।"
 

তিনি আরও জানান, বর্তমানে ২১টি অফডকে ৭৬ হাজার কনটেইনার আটকে আছে, যার মধ্যে ৬০ হাজার খালি কনটেইনারও রয়েছে। এগুলো ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোগুলোর (আইসিডি) কার্যক্রমকেও জটিল করে তুলছে।
 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের জয়েন্ট কমিশনার মোঃ তফছির উদ্দিন ভূঁঞা দাবি করেন, অচল স্ক্যানারের মধ্যে দুটি মেরামত করা হয়েছে, যদিও আরও দুটি এখনও অচল অবস্থায় আছে। তিনি বলেন, "এগুলো মেরামতের জন্য কিছু যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হবে। প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে সময় লাগতে পারে।"
 

কাস্টমসের দীর্ঘদিনের ব্যর্থতায় ১০ হাজারেরও বেশি কনটেইনার এখনো খালাস হয়নি—এর কিছু আবার ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পড়ে আছে। এসব কনটেইনার বন্দর ইয়ার্ডের মোট জায়গার ২০ শতাংশেরও বেশি দখল করে রেখেছে। এবিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ বারবার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও কাস্টমস এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
 

নিলামযোগ্য এসব কনটেইনারের জট নিয়ে জানতে চাইলে এক কর্মকর্তা বলেন, "সরকার সম্প্রতি নতুন আদেশ জারি করেছে, যেখানে অ্যাসেসড ভ্যালুর (মুল্যায়িত দাম) ৬০ শতাংশ কভার করার শর্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে এখন আমরা প্রথম নিলামেই এসব পণ্য ছাড় করতে পারব। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে প্রতি মাসে ২৫০ থেকে ৩০০ টিইইউ খালাস করার।"
 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের মুখপাত্র ও উপকমিশনার এইচ এম কাবির বলেন, "হ্যান্ডলিং যত বাড়ছে, আমাদের ওপর ডেলিভারির চাপও ততো বাড়ছে। বর্তমান জট নিরসনে কিছু বিষয়ে সমন্বয় প্রয়োজন।"
 

কাস্টমস বিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পখাত:
শুধু যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, প্রক্রিয়াগত জটিলতাও ভোগাচ্ছে আমদানিকারকদের। ওয়ার্কা ও জোবায়ের এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মালিক ইয়াসির আরাফাত গত মাসে তার কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ২৭ দশমিক ৫ টন পিংক সল্ট আমদানি করেন।


চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এক উপকমিশনার চালানটি আটকে দেন, দাবি করেন চালানের আরও যাচাই প্রয়োজন। এরপর ওই কর্মকর্তা বদলি হন, নতুন কর্মকর্তা দায়িত্ব নিয়ে আবারও যাচাই শুরু করেন। এখনও কনটেইনারটি আটকেই রয়েছে।

 

টিবিএস'কে আরাফাত বলেন, "সাধারণত একটি আমদানি চালান ছাড়তে ৪-৫ দিন লাগে। কিন্তু এবার ফাইল যাচাই ও প্রক্রিয়ায় ১৩ দিন নিয়েছে। কর ও শুল্ক পরিশোধ করার পরও কর্তৃপক্ষ আমার কনটেইনার ছাড়ছে না। কাঁচামালের অভাবে আমার কারখানা গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ। যদি এমন হয়, আমরা এখানে কীভাবে ব্যবসা করব?"
 

এই উদ্যোক্তার ভোগান্তির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাস্টমস কর্মকর্তা এইচ এম কবির বলেন, "পণ্যের ডেলিভারিতে হয়রানি বা অযথা বিলম্বের অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখব।"

চেম্বােরর সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, "বন্দর ২৪ ঘণ্টা সচল থাকে, কিন্তু কাস্টমস সেই গতিতে কাজ করে না। তারা ফাইল আটকে রাখে শুধু আমদানিকারকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের জন্য। সরকারকে অবশ্যই শুল্ক কর্তৃপক্ষকে আরও জনবল দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং দুর্নীতি দমন করতে হবে, তাহলেই ক্লিয়ারেলন্স (ছাড় প্রক্রিয়া) সহজ হবে।"

 

ক্লিয়ারিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব কাজী মাহমুদ ইমাম  বিলু বলেন, "সাধারণত কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পর একটি কনটেইনার ৪-৫ দিনের মধ্যে ছাড় হয়। তবে ল্যাব টেস্টের প্রয়োজন হলে ১৫-২০ দিন সময় লাগে। কিন্তু কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের সময় আমদানিকারকেরা ব্যাপক হয়রানির শিকার হন, আর এ কারণেই জট আরও বাড়ছে।" 

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, শুধু জাহাজ ভেড়ার জায়গা বাড়ালেই হবে না; কাস্টমস ডিজিটালাইজেশন, পরিত্যক্ত কনটেইনার দ্রুত নিলামে তোলা, নষ্ট স্ক্যানার মেরামত এবং ল্যাব সুবিধা সম্প্রসারণ এখন অত্যন্ত জরুরি। 

 

মেরিটাইম এক্সপার্ট ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরি বলেন, " চট্টগ্রাম বন্দরের সরবরাহ শৃঙ্খলা ও লজিস্টিক্স ব্যবস্থাপনায় দক্ষ পরিচালকের অভাব রয়েছে, এ কারণেই বারবার জট তৈরি হচ্ছে। প্রফেশনালদের নিয়োগ করলে ব্যবস্থাটি আরও কার্যকর হতে পারে।"
 

বাড়তি চাপ মোকাবিলার চেষ্টা :
৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আউটার অ্যাংকারেজে বা বহির্নোঙরে জাহাজ জট অনেকটা কমেছে। আগে বার্থিংয়ের জন্য প্রতিদিন ১৭–২০টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকত, প্রতি জাহাজে দৈনিক ১০–১৫ হাজার ডলার ডেমারেজ খরচ হতো। 


চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) জাহাজ বার্থিয়ের গতি বাড়াতে এবং জট কমাতে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে কনটেইনার জাহাজের জেটি ১০ থেকে বাড়িয়ে ১২–১৩ করা হয়েছে। ফলে ১ আগস্ট বহির্নোঙরে যেখানে ২০টি জাহাজ অপেক্ষমাণ ছিল, ১৯ আগস্ট তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৭টিতে।

 

এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল ডেমারেজ চার্জ কমানো—প্রতি অতিরিক্ত দিনের জন্য একটি জাহাজে প্রায় ১৫ হাজার ডলার খরচ কমালো -যা খালাস কার্যক্রমে গতি এনে দিয়েছে এবং সাপ্লাই চেইনের সূচিতে অগ্রগতি এনেছে ।
 

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী হ্যান্ডলিং রেট স্থিতিশীল রয়েছে: ১৯ আগস্টে ৯,৬৪৪টি টিইইউ (৪,৫৮৯টি আমদানি ও ৫,০৫৫টি রপ্তানি/ফাঁকা) কনটেইনার প্রসেসিং করা হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ১০,৯৯৭ টিইইউ। তবে দ্রুত খালাসের ফলে আবার ইয়ার্ডে ভিড় বেড়েছে। 
যেখানে ১ আগস্ট থেকে কনটেইনারের সংখ্যা ৯,০৭৩ ইউনিট বেড়েছে, ফলে ইয়ার্ডের জায়গার সক্ষমতাকে চাপে ফেলেছে।

বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, দ্রুত বার্থিং এক ধরনের জট কাটিয়ে দিলেও আরেক ধরনের জটের সমস্যা বাড়িয়েছে। মাসে প্রায় ১০০টি কনটেইনার জাহাজ হ্যান্ডেল করার জন্য ডিজাইন করা চট্টগ্রাম বন্দর,যেখানে ১৩টি বার্থ এবং প্রতি জাহাজের গড় অবস্থানকাল তিন দিন ধরা হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিকভাবেও সিঙ্গাপুরের মতো বড় বন্দরে বিলম্ব বেড়েছে, যা আরও বেশি ফিডার জাহাজ চট্টগ্রামের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং স্থানীয়ভাবে চাপ বাড়াচ্ছে।
 

কিন্তু আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে ১১৮টি জাহাজ অনুমোদিত হয়েছিল, যা চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার চেয়ে ১৮টি বেশি, এর পেছনে আংশিক ভূমিকা রাখে সিঙ্গাপুর ও কলম্বোর মতো ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরগুলোর জট। এর ফলে জাহাজের গড় অপেক্ষার সময় গত সপ্তাহে ৩.৯ দিনে পৌঁছেছে। গিয়ারলেস জাহাজগুলো চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনাল এবং নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে ৬-১০ দিনের বিলম্বের মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে জিয়ারযুক্ত জাহাজগুলো জেনারেল কার্গো বার্থে ১–৩ দিনে খালাস হচ্ছে।
 

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে তিনটি টার্মিনালে মোট ১৮টি জেটি রয়েছে। এর মধ্যে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের চারটি এবং চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালের দুটি কনটেইনার জাহাজের জন্য নির্ধারিত। জেনারেল কার্গো বার্থের অধীনে আরও ছয়টি জেটি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ব্যবহৃত হয়, বাকি ছয়টি সাধারণ কার্গোর জন্য।
 

বন্দর কর্মকর্তারা দাবি করছেন, যদিও ইয়ার্ডের কনটেইনার অক্যুপেন্সি বাড়লেও, বার্থিং সক্ষমতা ও দৈনিক হ্যান্ডলিং রেট বাড়ার কারণে সার্বিকভাবে বন্দর জট কমেছে। ১৯ আগস্ট বন্দর ৪,২৫৪ টিইইউ কনটেইনার ডেলিভারি করেছে, যা আগের কয়েক দিনের তুলনায় বেশি। একে তারা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির ফল বলেও উল্লেখ করেছেন।
 

এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর—  ৩.২৭৬ মিলিয়ন টিইইউ বা দিনে প্রায় ৯,০০০ ইউনিট হ্যান্ডলিং করে নতুন রেকর্ড করেছে, যা আগে গড়ে ৭,০০০–৮,০০০ ছিল। ডেলিভারি প্রতিদিন প্রায় ৫,০০০–৬,০০০ ইউনিটের মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে; তবে স্ক্যানারের সমস্যার কারণে ১৮ আগস্ট মাত্র ৩,৮৩২টি কনটেইনার  এবং পরের দিন ৪,২৫৪টি ডেলিভারি হয়েছে।


চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, "কনটেইনারের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু আমাদের সক্ষমতাও বেড়েছে—এখন বন্দরে প্রায় ৬০,০০০ টিইইউ ধারণক্ষমতা আছে। তবে এক সঙ্গে চারটি স্ক্যানার নষ্ট হওয়ার কারণে খালাস কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি।"

 

সম্প্রতি বন্দর পরিদর্শনকালে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, নিউ মুরিং টার্মিনালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধান হস্তক্ষেপ হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ৩০ শতাংশ বাড়িয়েছে; ফলে জাহাজ অপেক্ষার সময়ও কমেছে।