খালেদা জিয়ার মুক্তি, ‘দুর্নীতি-অনিয়ম’ ও ভারতের সঙ্গে ‘দেশবিরোধী’ চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি করতে চায় বিএনপি

প্রকাশকালঃ ০৬ জুলাই ২০২৪ ১২:৩৩ অপরাহ্ণ ১০৬২ বার পঠিত
খালেদা জিয়ার মুক্তি, ‘দুর্নীতি-অনিয়ম’ ও ভারতের সঙ্গে ‘দেশবিরোধী’ চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি করতে চায় বিএনপি

খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন সরকারের নানা ‘দুর্নীতি-অনিয়ম’ ও ভারতের সঙ্গে ‘দেশবিরোধী’ চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নতুন কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বিএনপি এককভাবে করবে।


তবে দুর্নীতিবিরোধী ও চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে শরিকদের সঙ্গে যুগপত্ভাবে কর্মসূচি পালনের পক্ষে দলে মত আছে। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি শেষ হয় গত বুধবার। প্রথম দুটি কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও জেলা পর্যায়ের সমাবেশে বাধা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি জেলা ও মহানগর পর্যায়ে থাকবে নাকি উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করা হবে, সে বিষয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হবে।


১০ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত মঙ্গলবার বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া। এবার তাঁর হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে হঠাৎ নতুন কর্মসূচি শুরু হয়। এই কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার পক্ষে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। নেতারা মনে করেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের বিষয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের আবেগ কাজ করে। ফলে এ ইস্যুতে কর্মসূচি দিলে তাতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও বেশি হয়। গত ২৯ জুন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন কর্মসূচিতে নেতাদের বেশ সক্রিয় দেখা গেছে।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের কর্মসূচি চলবে। এই কর্মসূচি থামবে না। স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
সম্প্রতি একাধিক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই কথা বলেছেন। তিনিও জানান, আরো কর্মসূচি আসবে। গত এক সপ্তাহে তিন দিনের কর্মসূচি পালনের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের মূল্যায়ন হলো, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ঢাকার সমাবেশে বড় জমায়েত হয়েছে। মহানগর ও জেলা পর্যায়ের কর্মসূচিতেও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়েছে। কয়েকটি জেলায় বাধা-হামলার পরও নেতাকর্মীরা লড়াই করেছেন।

 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিএনপির শীর্ষ নেতার সঙ্গে দলের যুগ্ম মহাসচিবদের বৈঠক হয়। এরপর যুগ্ম মহাসচিবরা দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত প্রস্তাব পাঠান। প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে, তা দেশবিরোধী। সম্প্রতি গণমাধ্যমে সরকারের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পাওয়ার বিষয়টি দেশে দুর্নীতির বিস্তারের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রস্তাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি দুর্নীতিবিরোধী ও চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি দেওয়ার কথাও বলা হয়। 

 

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স কালের কণ্ঠকে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার অসম চুক্তি-সমঝোতা এবং দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক জানান, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি হলো। সরকারসংশ্লিষ্টদের একের পর এক দুর্নীতির খবর বের হয়ে আসছে। এই ইস্যু নিয়ে তো মাঠে থাকতে হবে। তা ছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনে বিএনপি সক্রিয় হতে পারে। তিনি বলেন, একের পর এক ইস্যু সামনে আসছে। ফলে এসব ইস্যুতে কোনো না কোনোভাবে বিএনপিকে মাঠে থাকতে হবে।