বিয়ের পিঁড়িতে বসার স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ১৮ বছরের এক তরুণী। তবে পথে ভয়ংকর ঘটনার শিকার হন তিনি। অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে একটি নির্জন স্থানে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা ১৭ বছর বয়সী আরেক তরুণীকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়।
ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার রাতে, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায়। ঘটনার তিন দিন পর শনিবার চুনারুঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পারভেজ মিয়া (২৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে ধর্ষণের শিকার তরুণী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দুই তরুণী ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। তাঁরা সম্পর্কে চাচাতো বোন। ১৮ বছর বয়সী তরুণীর বিয়ে ঠিক হওয়ায় দুই বোন একসঙ্গে বাড়ি ফেরার জন্য ছুটি নিয়ে রওনা দেন।
বুধবার রাত ১১টার দিকে তাঁরা ঢাকাগামী একটি বাসে শায়েস্তাগঞ্জে এসে নামেন। সেখান থেকে নবীগঞ্জে তাঁদের বাড়ি পৌঁছানোর জন্য একটি অটোরিকশা ভাড়া করেন। কিন্তু পথে অটোরিকশাচালক আরও তিনজন তরুণকে গাড়িতে তোলে। তরুণীদের আপত্তি সত্ত্বেও চালক জানায়, তারা সামনে নেমে যাবে।
কিছুক্ষণ পর অটোরিকশা প্রধান সড়ক ছেড়ে অন্য রাস্তায় ঢুকে পড়ে। সন্দেহ হলেও তরুণীরা কিছু বোঝার আগেই চুনারুঘাটের নির্জন এলাকায় অটোরিকশা থামে। সেখানে চালক ও সঙ্গে থাকা তিনজন মিলে ১৮ বছর বয়সী তরুণীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ১৭ বছর বয়সী তরুণী চিৎকার করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাঁর সাহসিকতার কারণে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।
ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়া তরুণী কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে ফিরে রক্তাক্ত অবস্থায় চাচাতো বোনকে উদ্ধার করেন। তাঁরা পাশের একটি গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং ঘটনা গ্রামবাসীদের জানান। পরদিন সকালেই তাঁরা বাড়ি ফিরে যান।
তবে মানসম্মানের ভয়ে দুই দিন চুপ থাকেন পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে শনিবার ধর্ষিতা তরুণীর মায়ের উদ্যোগে থানায় মামলা করা হয়। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
চুনারুঘাট থানার ওসি নূর আলম বলেন, অটোরিকশাচালকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পারভেজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
ধর্ষণের শিকার তরুণীর মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করা ছিল। মেয়ের সঞ্চিত অর্থও সঙ্গে ছিল। তবে এই ঘটনায় তাঁদের স্বপ্ন চূর্ণ হয়ে গেছে।
বর্তমানে পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে এবং ভুক্তভোগীদের চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।