ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের দাবি বাস্তবায়ন করার ঘোষণাঃ- রাহুলের গান্ধীর,

প্রকাশকালঃ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:৩৯ অপরাহ্ণ ২০৮ বার পঠিত
ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের দাবি বাস্তবায়ন করার ঘোষণাঃ- রাহুলের গান্ধীর,

ভারতের কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযান শুরুর দিনেই ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) আইনি বৈধতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা চলাকালে গতকাল মঙ্গলবার ছত্তিশগড়ে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাহুল বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে কৃষকদের ফসলের জন্য এমএসপির আইনি নিশ্চয়তা দেবে। এটাই দলের প্রথম প্রতিশ্রুতি।

রাহুল বলেন, ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা থেকে কংগ্রেস পাঁচটি ন্যায় বা নিশ্চয়তা ঘোষণা করবে। এমএসপির নিশ্চয়তা তার প্রথম। এই বিষয়টি আইনি বৈধতা পেলে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাবেন। দেশের ১৫ কোটি কৃষক পরিবার এর ফলে উপকৃত হবেন। তাঁদের জীবন থেকে অনিশ্চয়তা দূর হবে।

ছত্তিশগড়ে এক জনসভায় এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় রাহুলের পাশে ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। রাহুল বলেন, এমএসপির আইনি বৈধতা কৃষকদের তিনটি উপকার করবে। তাঁদের জীবনে তিনটি বদল আনবে। প্রথমত, তাঁরা সবাই ফসলের ঠিক দাম পাবেন। দ্বিতীয়ত, এর ফলে তাঁদের আত্মহত্যার পথ বাছতে হবে না। তৃতীয়ত, কৃষিকাজ লাভজনক বলে গণ্য হবে। ১৫ কোটি কৃষক পরিবারকে অনিশ্চয়তার দিন কাটাতে হবে না।

মাত্র তিন দিন আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর প্রদেশের কৃষকনেতা চরণ সিংকে ভারতরত্ন: সম্মান দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতরত্ন খেতাব দিয়েছে প্রয়াত কৃষিবিজ্ঞানী এস এম স্বামীনাথন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওকে। ভোটের মুখে এই মরণোত্তর এই সম্মান দেওয়ার পেছনে বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট।

কৃষকদের দিল্লি অভিযান শুরুর দিনেই এমএসপি নিয়ে রাহুলের প্রতিশ্রুতি বিজেপির সেই রাজনৈতিক পাল্টা। বিব্রত বিজেপি নেতারা পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন, স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ ইউপিএ আমলে কংগ্রেস কেন রূপায়ণ করেনি, সেই উত্তর রাহুলের আগে দেওয়া উচিত।

কৃষকদের এই দিল্লি অভিযানের মূল দাবিগুলোর অন্যতম এমএসপিকে আইনের আওতায় আনা, স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ রূপায়ণ, কৃষিঋণ মওকুফ এবং কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার। ২০২০-২১ সালে কৃষকদের দিল্লি অবরোধের সময়েও এগুলোই ছিল মুখ্য দাবি।

কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের মতো দাবি সেবার মেনে নিলেও এমএসপিকে আইনি বৈধতা দেওয়ার বিষয়টি বিজেপি বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কৃষকনেতাদের অভিযোগ, দীর্ঘ তিন-চার বছর ধরে কেন্দ্র নানা অছিলায় টালবাহানা করে গেছে। দাবি পূরণ করেনি।

গত সোমবার চণ্ডীগড়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ও ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী পীযূষ গয়াল কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু মধ্য রাত পর্যন্ত কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযান শুরু হয়। সরকারের বক্তব্য, কৃষকনেতারা নতুন নতুন দাবি জানাচ্ছেন। কৃষকনেতাদের অভিযোগ, সরকার দাবি না মেনে নানা অছিলায় সময় নষ্ট করে চলেছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, চাল, গমসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের এমএসপি গত কয়েক বছরে ৬০ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়েছে। স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে সব পণ্যের এমএসপির জন্য আইনি বৈধতা দিলে সেই ফসল কিনতে সরকারের ভর্তুকি পাঁচ গুণ বেড়ে ১০ লাখ কোটিতে পৌঁছে যাবে।

কৃষকনেতাদের বক্তব্য, সরকার শিল্পবন্ধুদের জন্য লালগালিচা বিছিয়ে রাখে, ঋণ বাবদ হাজার হাজার কোটি রুপি মওকুফ করে অথচ কৃষকদের জন্য রাস্তায় পুঁতে দেয় পেরেক ও গজাল, গড়ে তোলে ব্যারিকেড।