ভাঙ্গায় কুমার নদে অস্ত্র হাতে মহড়া, ভিডিও ভাইরাল

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৩৬ অপরাহ্ণ   |   ২৭ বার পঠিত
ভাঙ্গায় কুমার নদে অস্ত্র হাতে মহড়া, ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি:-

 

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কুমার নদে কিশোর-তরুণদের দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর এলাকার বাইসাখালি, চণ্ডীদাসদী থেকে আতাদী ও পূর্ব সদরদী পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটারজুড়ে অন্তত ২০টি স্পিডবোট ও অর্ধশতাধিক ট্রলারে এ মহড়া চলে।
 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেশ কিছু স্পিডবোট থেকে রামদা, চায়নিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। এসবের মধ্যে ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ আট বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ বন্ধ থাকলেও ভাদ্র মাসের শেষ দিনে স্থানীয় তরুণরা নৌকা ও ট্রলার নিয়ে মহড়া দেয়। তবে অস্ত্র হাতে এমন প্রদর্শনী এবারই প্রথম দেখা গেল।
 

ঘটনার পর ভাঙ্গা থানা পুলিশ রাতে অভিযান চালালেও কাউকে আটক বা শনাক্ত করতে পারেনি। রাত ১০টার দিকে পুলিশের অভিযানের ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার হয়, যেখানে দেখা যায়, পুলিশ ট্রলারে অভিযান চালাচ্ছে। এ সময় কাছাকাছি একটি নৌকায় উচ্চ শব্দে গান বাজাচ্ছিল কয়েক তরুণ, যারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়।
 

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভাঙ্গা বাজারের চা বিক্রেতা কুটি শেখ বলেন, “বিষয়টি দেখার পর থেকেই ভয়ে আছি। কখন কী ঘটে যায় বলা যায় না।” ছিলাধরচর ও হোগলাডাঙ্গী গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তাদের এলাকায় কয়েকজন বখাটে তরুণ অস্ত্র হাতে স্পিডবোটে মহড়া দিয়েছে। তবে সবাইকে তারা শনাক্ত করতে পারেননি।
 

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রবীণরা জানান, কুমার নদীর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা কয়েকশ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে। এটি আয়োজনে দীর্ঘদিন ভাঙ্গা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ, বণিক সমিতি ও পৌরসভা সক্রিয় ছিল। ২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলার পর প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আবার শুরু হলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আধিপত্য বিরোধের কারণে ২০১৮ সাল থেকে আর আয়োজন হয়নি।
 

ভাঙ্গা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি জগদীশ মালো জানান, পূজার দিনে আনুষ্ঠানিক নৌকাবাইচ না হলেও কিশোর-তরুণেরা ট্রলার ও স্পিডবোটে নদীতে মহড়া দিয়ে থাকে। তবে অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি তিনি জানেন না।
 

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ঘটনার পর অভিযান চালানো হয়েছে। তবে জড়িতদের কেউ এখনো আটক বা শনাক্ত হয়নি। অভিযান অব্যাহত আছে।”