প্রকাশকালঃ
৩১ জুলাই ২০২৩ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ ২০৬ বার পঠিত
পবিত্র কোরআনে এমন অসংখ্য আয়াত আছে, যেগুলো আবু বকর (রা.)-এর মহান ব্যক্তিত্ব, ঈমানের ওপর তাঁর অবিচলতা, সত্যবাদিতা এবং ইসলামের জন্য তাঁর অবদানের স্বীকৃতি বহন করে। ঐতিহাসিক হিজরতের সফরে ‘সাওর’ গুহার ঘটনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা তাঁকে ‘সাহেবুন্নবী’ বা নবী (সা.)-এর সঙ্গী বলেছেন।
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘...যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিল; সে [রাসুলুল্লাহ (সা.)] তখন তার সঙ্গী [আবু বকর (রা.)]-কে বলেছিল, বিষণ্ণ হয়ো না। আল্লাহ তো আমাদের সঙ্গে আছেন...। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৪০)
শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভি (রহ.)-এর মতে, সুরা ফাতেহায় বর্ণিত ‘সিরাতে মুস্তাকিম’ বা সরল-সঠিক পথ বলতে আবু বকর (রা.) ও ওমর (রা.)-এর পথের কথা বলা হয়েছে। তাবুক যুদ্ধে তিনি তাঁর সম্পূর্ণ সম্পদ দান করার পর আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার ২৭১ নম্বর আয়াত অবতীর্ণ করেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তবে তা ভালো, আর যদি গোপনে করো এবং অভাবগ্রস্তকে দান করো, তা তোমাদের জন্য আরো ভালো।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)
আল্লাহ তাঁর নবীকে পরামর্শ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘...তুমি কাজকর্মে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করো।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)
ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মতে, এখানে ‘তাদের’ বলতে আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (মুসতাদরাক হাকিম সূত্রে তাফসির ইবনে কাসির)
আবু বকর (রা.)-এর উপাধি হলো ‘সিদ্দিক’ বা অধিক সত্যবাদী। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা সত্য নিয়ে এসেছে এবং যারা সত্যকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তারাই তো মুত্তাকি।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ৩৩)
আলী (রা.)-এর মতে, এই আয়াতে নবী (সা.) ও আবু বকর (রা.)-এর কথা বলা হয়েছে। (তাফসিরে তাবারি) আল্লাহ বলেন, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচররা কাফিরদের প্রতি কঠোর ও নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল। ’ (সুরা ফাতাহ, আয়াত : ২৯)
ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মতে, এখানে ‘তাঁর প্রধান সহচর’ আবু বকর (রা.)-এর কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে। তৎকালীন আরবের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবু বকর (রা.) অসংখ্য ক্রীতদাসকে ক্রয় করে মুক্ত করে দিয়েছেন, সে বিষয়টি পবিত্র কোরআনের সুরা আল-লাইলে বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকি হলে এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করলে আমি (আল্লাহ) তার জন্য সুগম করে দেব (জান্নাতের) সহজ পথ।’ (সুরা : লায়ল, আয়াত : ৫-৭)
উল্লিখিত আয়াতগুলোতে বিশেষভাবে আবু বকর (রা.)-এর কথা বলা হয়েছে। (তাফসিরে কুরতুবি) আবু বকর (রা.)-এর বয়স যখন ৪০ বছর, তখন তিনি তাঁর মা-বাবা, সন্তান-সন্ততির জন্য ইসলাম গ্রহণ ও হেদায়েতের দোয়া করেছেন।
আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেছেন। সে ঘটনাও আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সুরা আহকাফের ১৫ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া কোরআনের আরো বহু আয়াতে আবু বকর (রা.)-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে।
আল-কোরআন অমর গ্রন্থ। তাই এসব আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আবু বকর (রা.)-এর মর্যাদা অমর ও অক্ষয় করে দিয়েছেন।