ঢাকা প্রেস নিউজ
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানকে ভাটারা থানার অস্ত্র মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, কারাগারে মতিউর রহমান ডিভিশন ও চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রী লায়লা কানিজকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তাদের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র ও ২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরদিন আদালতে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে উপস্থাপন করা হলে, তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। একই দিন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তার স্ত্রী লায়লা কানিজকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত বছরের কোরবানির ঈদে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ঢাকার সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। একই সঙ্গে কেনেন কয়েক লাখ টাকার গরু। এরপর থেকেই তাদের পরিবারের বিলাসবহুল জীবনযাপন, দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, এবং রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি ও জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
এই বিতর্কের জের ধরে মতিউর রহমানকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে গত ৩১ জুলাই তাকে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে বাধ্য করে সরকার।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের নামে থাকা বিপুল সম্পদের তথ্য। আদালতের আদেশে তাদের নামে থাকা বহু জমি, ঢাকায় চারটি অ্যাপার্টমেন্ট এবং ১১৬টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা ১৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ২৩টি বিও হিসাবও (শেয়ার ব্যবসার অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও তদন্ত করছে দুদক।
এই সমস্ত বিতর্ক ও মামলার সূত্র ধরে মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।