জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠতা ও জবাবদিহিমূলক ভূমিকা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম শুধু সাধারণ জনগণ নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ চাওয়া। গণতন্ত্রের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে হলে গণমাধ্যমকে জবাবদিহিমূলক হতে হবে। এভাবেই জনগণের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।”
আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও জানান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকার ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে পাঁচজন উপদেষ্টা রয়েছেন, যারা শুধু কমিশনের সুপারিশ নয়, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ও পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, “সংস্কার তখনই টেকসই হবে যখন এটি জনসমর্থন, রাজনৈতিক সমর্থন ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ঐক্যমতের ভিত্তিতে করা হবে। কেবল কাগজে পরিবর্তন আলে স্থায়িত্ব আসবে না; দরকার মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন।”
পরিবেশ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে, এজন্য আলাদা গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা হয়েছে। সুপারিশের সারাংশ ও বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষতা, সেলফ-রেগুলেশন, সেক্টরাল ইউনিটি এবং গণমাধ্যমকে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরির বিষয়গুলোও আলোচনায় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, “গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যদি সবাই মিলে বাস্তবায়ন করতে পারে, তবে সেটিই হবে টেকসই। সরকার সহায়তা করবে, তবে স্থায়ী রাখতে দায়িত্ব নিতে হবে গণমাধ্যমকেই।” একই সঙ্গে তিনি নৈতিকতা, দায়িত্বশীলতা, জনআস্থা এবং মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের গুরুত্বও তুলে ধরেন।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অনারারি নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি সায়িদ আহমেদ সভার সভাপতিত্ব করেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্যসচিব ইলিয়াস হোসেন এবং বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আল মামুন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নির্বাহী সদস্য গোলাম পারভেজ রেজা। সভায় বিভিন্ন মিডিয়া ও গণমাধ্যম সংগঠনের প্রতিনিধিরাও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।