আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ-
মুরাদনগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ১২ জনকে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে মোট ১২ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার আহতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই চেক বিতরণ করেন উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। চেক বিতরণকালে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক এডভোকেট ওবায়দুল হক সিদ্দিকী, সদস্য সচিব আল-মামুন ও মুখ্য সংগঠক আসিফ সরকার প্রমুখ।
মুরাদনগরে আন্দোলনে আহত সাব্বির হোসাইনকে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার চেক তুলে দিচ্ছেন, উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক এডভোকেট ওবায়দুল হক সিদ্দিকী।
চেক প্রাপ্ত আহতরা হলেন, পাহাড়পুর ইউনিয়নের ডেকরিপাড় গ্রামের রনি মিয়ার ছেলে সাব্বির হোসাইন, একই ইউনিয়নের দড়ানীপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম, একই গ্রামের হাকিম মিয়ার ছেলে মিনহাজুল ইসলাম, বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের দুয়ারিয়া গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন ভুইয়ার ছেলে তানভীর হাসান ভুইয়া, একই ইউনিয়নের লাজুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান, মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের মটকিরচর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম, একই ইউনিয়নের ধনীরামপুর গ্রামের কাউছার উদ্দিনের ছেলে তারিকুল ইসলাম তকি, মুরাদনগর গ্রামের নোয়াজ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী, একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মুর্শিদ মিয়া, আন্দিকুট ইউনিয়নের জাড্ডা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম, একই ইউনিয়নের গাঙ্গেরকুট গ্রামের শাহীন মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম ও যাত্রাপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম।
চেক বিতরণ কালে শারীরিক অবস্থা কেমন এমন প্রশ্নে গুরতর আহত সাব্বির হোসাইন বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। ঘাতক পুলিশের বুলেট আমার চোখের দুটি পর্দা ছিড়ে নিছে। ডান চোখের নীচে এখনো একটি বুলেট রয়ে গেছে। তাই প্রচন্ড ব্যথা করে। বুলেটটি বের করতে বলেছেন ডাক্তার, অনেক বড় একটা অপারেশন করা লাগবে। এক মাস পর পর চিকিৎসার জন্য ঢাকা যেতে হয়। কিন্তু গাড়ি ভাড়া দিয়ে যাওয়ার পয়সাও থাকে না।
সাব্বিরের বাবা রনি মিয়া বলেন, ছেলেটাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, সেই স্বপ্ন আমার কেড়ে নিলো আওয়ামী পুলিশ। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে আমার ছেলেকে ফার্মগেইট ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চোখের অপারেশন করি। কিন্তু গুলি লাগা চোখ দিয়ে সাব্বির দেখতে পারে না। ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।
মুরাদনগর উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকী বলেন, সাব্বির আমাদের জীবন্ত শহীদ। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পুলিশ শান্তিপূর্ণ একদফা আন্দোলনের মিছিলে গুলি করে সাব্বিরের সুন্দর জীবনটাকে অন্ধকার করে দেয়। আমরা এই ভাইটির পাশে আছি। নিয়মিত তাঁর খোঁজ-খবর নিচ্ছি।