মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের জ্ঞানার্জনের প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহ দিয়েছেন। মুমিনের আলোর মিনার পবিত্র কোরআনের প্রথম বার্তা ছিল, ‘ইকরা’। পড়ো! শুধু তাই নয়, পবিত্র কোরআনে তিনি জ্ঞানীদের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেছেন, আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে নিশ্চয়ই তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। আর ফেরেশতারা এবং জ্ঞানীরাও, আল্লাহ ন্যায়নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
তিনি ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই, (তিনি) পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮)
অর্থাৎ যে আল্লাহ বিশ্ব জাহানের সমস্ত তত্ত্ব, সত্য ও রহস্যের প্রত্যক্ষ জ্ঞান রাখেন, যিনি সমগ্র সৃষ্টিকে আবরণহীন অবস্থায় দেখছেন এবং যার দৃষ্টি থেকে পৃথিবী ও আকাশের কোনো একটি বস্তুও গোপন নেই এটি তার সাক্ষ্য। আর তার চেয়ে নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য আর কে দিতে পারে? কারণ পৃথিবীতে ইলাহের স্বত্ব দাবি করার অধিকার ও যোগ্যতা কারো নেই। তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে তিনি ছাড়া আর কোনো হক উপাস্য নেই।
তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা জুলুম ও অন্যায়। আল্লাহ তাআলার এ সাক্ষ্যের সঙ্গে তিনি আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাদেরও শরিক করেছেন। তারাও এ মহৎ সাক্ষ্য দিয়ে থাকে। তারপর আল্লাহ তাআলা আলেম তথা দ্বিনের জ্ঞানে জ্ঞানীদেরও এ সাক্ষ্য প্রদানের জন্য গ্রহণ করে সম্মানিত করেছেন।
এর মাধ্যমে তিনি মূলত আলেম তথা দ্বিনের জ্ঞানে জ্ঞানীদের সম্মান বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছেন।
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই কেবল তাকে ভয় করে।’ (সুরা : ফাতির, আয়াত : ২৮)
আল্লাহর শক্তিমত্তা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বিজ্ঞানময়তা, ক্রোধ, পরাক্রম, সার্বভৌম কর্তৃত্ব-ক্ষমতা ও অন্য গুণাবলি সম্পর্কে যে ব্যক্তি যত বেশি জানবে সে তত বেশি তাঁর নাফরমানি করতে ভয় পাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলির ব্যাপারে যত বেশি অজ্ঞ হবে সে তাঁর ব্যাপারে তত বেশি নির্ভীক হবে। এ কারণেই হয়তো আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বিনের জ্ঞান দান করেন।(বুখারি, হাদিস : ৭১)
প্রকৃত দ্বিনের জ্ঞান মুমিনের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর বিষয়, যা আল্লাহর রহমত ছাড়া পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আদর্শ ব্যক্তিত্ব গঠনে জ্ঞানার্জন অপরিহার্য। যে জ্ঞান মানুষকে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন ও তাকওয়া অবলম্বনে সহযোগিতা করে। যে মানুষকে কুফর-শিরিকের ঘোর অন্ধকার থেকে ঈমানের আলোর পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।