উল্লাপাড়ায় প্রতারণার শিকার হয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় বসতে পারল না তিন শিক্ষার্থী

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৬ জুন ২০২৫ ০৫:২৭ অপরাহ্ণ   |   ২৭ বার পঠিত
উল্লাপাড়ায় প্রতারণার শিকার হয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় বসতে পারল না তিন শিক্ষার্থী

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:-

 

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ল্যাব সহকারীর প্রতারণার কারণে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তিনজন শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সকল প্রস্তুতি থাকলেও শেষ মুহূর্তে তারা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণই হয়নি।
 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন—উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাজু আহমেদ এবং হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। তারা সবাই উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখার হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষের বোর্ড পরীক্ষা।
 

অভিযোগে জানা যায়, যথাসময়ে ভর্তি ও সকল অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনজন শিক্ষার্থী বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ল্যাব সহকারী মো. রাজু আহমেদের হাতে ২ হাজার ৬০০ টাকা করে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন। পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে তারা জানতে পারেন, তাদের নাম বোর্ডে নেই এবং প্রবেশপত্রও আসেনি।

 

                                                                                   অভিযুক্ত রাজু আহমেদ
 

শিক্ষার্থীরা জানান, ফরম পূরণ না হওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজু আহমেদ তাদের আশ্বস্ত করেন, পরীক্ষার দিনেই প্রবেশপত্র পাওয়া যাবে। কিন্তু পরীক্ষার দিন উপস্থিত হয়ে তারা পুরো বিষয়টির সত্যতা জানতে পারেন। সেই সঙ্গে ল্যাব সহকারী রাজুও হয়ে যান পলাতক।
 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে। তারা দাবি জানান, প্রতারক রাজু আহমেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাদের শিক্ষাজীবনের ক্ষতির যথাযথ প্রতিকার।
 

প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তার অজানা ছিল। তিনি জানান, এর আগেও রাজু আহমেদ ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, যার প্রমাণ মিললে তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়েছিল। এবারও অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পুনরায় কঠোর ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।
 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে বিষয়টির সত্যতা মিলেছে। অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
 

তবে রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি, কারণ তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।