মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের মহাপরিকল্পনা পুনর্গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি জানান, সবকিছু সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে ২০৩০ সালের মধ্যেই দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরটির কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকাজ শেষ হলে বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মহাপরিকল্পনা পুনর্গঠনের কাজ চলছে।
তিনি আরও জানান, সমুদ্রবন্দরটির নির্মাণ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে। এটি চালু হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সম্প্রসারণে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে জাপানের অবদান অসামান্য। মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ছাড়াও জাপান বাংলাদেশের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি জানান, জাইকা এই প্রকল্পকে সময়মতো সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, জাপানের স্বেচ্ছাসেবীরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা দুই দেশের প্রকৃত বন্ধুত্বের প্রমাণ।
ড. সাখাওয়াত হোসেন জানান, সরকার বন্দরগুলোর কার্যক্রম আরও সমন্বিত ও গতিশীল করার জন্য জাতীয় বন্দর কৌশল প্রণয়ন করছে, যেখানে জাইকার কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক মানের ডক-ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
জাহাজভাঙা শিল্পের পরিবেশগত মান যাচাইয়ের লক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের কথাও তিনি জানান। এই কমিটি শিপ রিসাইকেলিং ইয়ার্ড সরেজমিন পরিদর্শন করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেবে।
এছাড়া, মেরিন একাডেমিগুলোর উন্নয়নে জাপানের পেশাগত ও কারিগরি সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতায় মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হবে।