কুয়াশা, ঠান্ডা উপেক্ষা করে শুরু বোরো ধান চাষাবাদ 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০২:১৬ অপরাহ্ণ   |   ৮৪ বার পঠিত
কুয়াশা, ঠান্ডা উপেক্ষা করে শুরু বোরো ধান চাষাবাদ 

ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-



 

শীত ও ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করেই কুড়িগ্রামে শুরু হয়েছে বোরো চাষের ব্যস্ততা। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকেরা জমি তৈরি, পানি সেচ, হালচাষ ও বীজতলা থেকে চারা উত্তোলনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরোদমে চলছে চারা রোপণের কাজ। তবে কৃষকদের জন্য চাষাবাদ সহজ নয়। শ্রমিকের চড়া মজুরি, সার, কীটনাশক ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা হিমশিম খাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

 


 

উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ২২ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৮,৩৪০ হেক্টর, উফশী ১৪,০৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ধান ১৫০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ৬১৫ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে, যা অব্যাহত রয়েছে। এবারের বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২,৪৩,৪৩২ মেট্রিক টন। কৃষকরা ১,৩১০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন।
 

উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকেরা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, জমিতে পানি আটকে রাখা, শ্যালো মেশিন ও পাম্পের মাধ্যমে পানি সেচ, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারের সাহায্যে হালচাষ এবং চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত। দিনভর মাঠে কাজ করে তারা দুপুরের খাবারও সেরে নিচ্ছেন মাঠেই।
 

বোরো ধান রোপণের পর থেকে কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত প্রায় ৯০ দিন সময় লাগে। প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ খরচ হয় প্রায় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। গেলো মৌসুমে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় এবারও কৃষকরা ভালো দামের প্রত্যাশা করছেন।
 

উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের হারুনেফড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক আশরাফ আলী খন্দকার জানান, তিনি প্রায় ৬ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক খরচ মিলিয়ে মোট ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২-১৩ হাজার টাকা। তিনি আশাবাদী, ফলন ভালো হলে এ খরচ ও পরিশ্রম স্বার্থক হবে।
 

শ্রমিক মঞ্জু মিয়া, আব্দুল হামিদ, মফিজল মিয়া, হাবলু চন্দ্র ও গোলজার আলী জানান, প্রচণ্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে তারা কাজ করতে এসেছেন। তবে বর্তমান মজুরিতে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
 

উলিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন বলেন, কৃষকদের ‘লাইন-লোগো’ পদ্ধতিতে চারা রোপণে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে রোগবালাই কম হয় ও ফলন বৃদ্ধি পায়। কৃষকদের পরামর্শ প্রদান এবং রোগবালাই দমন বিষয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।