হাঁটলে কোলেস্টেরল কমবে

প্রকাশকালঃ ২৭ আগu ২০২৩ ০৩:৫৩ অপরাহ্ণ ২১১ বার পঠিত
হাঁটলে কোলেস্টেরল কমবে

ক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও ধমনিসংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তবে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক পরিশ্রম কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন অন্তত ৩০-৩৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। হাঁটুর কোনও সমস্যা থাকলে— সিঁড়ি বেয়ে ওঠা নামা করা, বেশি হাঁটা বারণ হলে শরীর বুঝে কিছু ব্যায়াম করুন। শরীরকে যত বেশি নড়াচড়া করানো যাবে, শারীরিক ব্যায়াম যত বাড়াবেন ততই কোলেস্টেরল কমানোর পথে এগিয়ে যাবেন। খারাপ কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাধারণ উপায়গুলো হলো: হাঁটা বা জগিং, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি। 

যদি ব্যায়ামাগারে যাওয়ার অভ্যাস থাকে কিংবা ঘরে ব্যায়ামের উপকরণ থাকে তবে ১৫ মিনিটের ধীর গতির শরীরচর্চায় কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব। কোলেস্টেরলে থাকা ট্রাইগ্লিসারাইড দেহে শক্তি হিসেবে খরচ হয়। ব্যায়াম করলে ট্রাগ্লিসারাইড খরচ হয় ফলে এর মাত্রা কমে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুসারে, প্রতিদিন ‘কার্ডিওভাস্কুলার’ ব্যায়াম করলে গড়ে ২৪ শতাংশ ট্রাইগ্লিসারাইড হ্রাস পায়। ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ‘হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটেন্স (এইচডিএল)- এর মাত্রাও বাড়ায়। যা ভালো কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত।


ভালো কোলেস্টেরল বাড়ানোর পন্থা
যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ডা. রজার ব্লুমেন্থাল বলেন, ব্যায়াম করার অভ্যাস যদি না থাকে তবে এখন থেকেই ধীরে শরীরচর্চা শুরু করলে উপকার পাওয়া যাবে। ইট দিস, নট দ্যাট ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, আমরা এমনও দেখেছি যাদের খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যকর নয় অথচ ব্যায়াম করেন তারা এলডিএল’-এর মাত্রা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমাতে পেরেছেন। আর তাদের এইচডিএল’-এর মাত্রা বেড়েছে ২০ শতাংশ।

তিনি পরামর্শ দেন, ব্যায়াম করায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া পর দিনে অন্তত ১৫ মিনিট শরীরচর্চা করুন। যদি হাঁটা শুরু করেন তবে একটু জোরে হাঁটুন। এভাবে গতি ও সময় বাড়ালে ভালো ফলাফল মিলবে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত হাঁটার পাশাপাশি খাবার খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস থাকলে, তা খাবার হজমে অনেক উপকার করে। তাদের মতে, যাদের হজমের নানা সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য অবশ্যই খাওয়ার পর হাঁটা দরকার। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন হলে খাবার সঠিকভাবে পাকস্থলীতে যায় ও তা দ্রুত হজম হতেও সাহায্য করে।


শুধু খাবার হজমে সাহায্য করাই নয়, খাওয়ার পর হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিক থাকে বলেও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, যারা টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা যদি নিয়মিত খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটেন, তাহলে রক্তে শর্করা তৈরিতে তার প্রভাব পড়ে। তাদের ভাষায়, খাবার রক্তে শর্করা তৈরি করে। কিন্তু খাবার খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস থাকলে রক্তে শর্করা তৈরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগও প্রতিরোধ করা যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিক রাখতে প্রত্যেক বার খাওয়ার পর অন্তত ১০ মিনিট হালকা হাঁটার প্রয়োজন।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত শরীরচর্চার পরামর্শ দেন। খাবার খাওয়ার পর নিয়মিত হাঁটাচলা করলে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। আর রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মতো হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। যারা অতিরিক্ত ওজন কমানো নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন, তাদের জন্যও খাবার খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস খুবই উপকারী।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার খাওয়ার পর অন্তত ১০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস থাকলে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য খাবার খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস খুবই উপকারী। পাশাপাশি এই পন্থা আরও কার্যকর হবে যখন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসও গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শও মেনে চলতে হবে।