ক্ষমতাসীনদের বর্গী বলে মন্তব্য করলেন মির্জা ফখরুল

প্রকাশকালঃ ০২ জুন ২০২৪ ০৫:১৬ অপরাহ্ণ ৮৭ বার পঠিত
ক্ষমতাসীনদের বর্গী বলে মন্তব্য করলেন মির্জা ফখরুল

ক্ষমতাসীনদের বর্গী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এরা সরকার নয়, বর্গী-লুটেরা। এদের হটাতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব থাকবেনা। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

 

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন সরকার দেশের টাকা লুটে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। তারা আজ দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। জাতি এখন দ্বিধাবিভক্ত। তিনি  বলেন, ক্ষমতায় থাকতে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে একেকজন রক্ষী তৈরি করেছে সরকার। আমরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছি। সরকারের পতন কেবল সময়ের ব্যাপার।

 

আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতা নেই বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পত্রিকা খুললে শুধু লুট আর লুটের খবর। কারা লুট করছে? যারা বড় বড় কর্তা। সংসদে ভদ্রলোক কয়জন খুঁজে পাবেন?  তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক লুট করছে। রিজার্ভের ডলার লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। শেয়ার বাজারে রথী-মহারথীরা লুট করছে। তারা এতো বড় মানুষ তাদের পাশে যাওয়া যায় না। কেউ দরবেশ, কেউ মাফিয়া, কেউ হুজুর। আজকে চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণ গায়েব হয়ে গেছে। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই।

 

তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানিসহ বড় বড় প্রকল্পের নামে যেসব চুক্তি করা হয়েছে। তা কোনো দেশপ্রেমিক লোক করতে পারে না। আসলে এই সরকারের লোকজন তারা তো বর্গী। সেজন্যই সমস্ত টাকা লুট করে পাচার করছে।

 

তিনি বলেন, মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা। উন্নয়নের নামে দুর্নীতি হচ্ছে। একটা প্রজন্মকে ঋণের বোঝার ওপর রেখে যাবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র কিছুই জানেনা বেনজীর সম্পর্কে? রাষ্ট্র দুর্নীতিবাজ সম্পর্কে না জানলে রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র থাকেনা।

 

ফখরুল বলেন, আজকে আমাদেরকে দেশ রক্ষা করতে হলে জিয়াউর রহমানের মতো নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন। যদিও বিরূপ পরিবেশে আছি। সত্য কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দিবে সরকার। জেলে যেতে হচ্ছে, মার খেতে হচ্ছে। তবুও বসে থাকলে চলবে না। রুখে দাঁড়াতে হবে।

 

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান তো নিজে রাজনীতিতে আসেননি। তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল। ‘৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্ব দেখে ‘৭৫ সালে সৈনিকেরা তাকে ফের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, জাতি যতদিন থাকবে জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা ততদিন থাকবে। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। তিনি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে সামনে এনেছিলেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত করতে উদ্যোগ নেন। সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন দেশপ্রেমিক। সেজন্যই সব রাজনৈতিক দল তার ওপর আস্থা রেখেছিল। কমিউনিস্ট পার্টি ও মোজাফফর সাহেবের ন্যাপ জিয়াউর রহমানের ১৯ দফাকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

 

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক সামসুল আলম সেলিম, ডা. আবু নাসের প্রমুখ।